পুরো নাম মাশরুর রাব্বি ইনান হলেও সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে বিভিন্ন ভিডিও বানিয়ে ‘কিটো ভাই’ হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। আগে নাটকে অভিনয় করলেও প্রথমবার তিনি সিনেমায় অভিনয় করলেন!
দীপংকর দীপনের ‘অন্তর্জাল’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক হতে যাচ্ছে কিটো ভাই-এর।
ফেসবুক ইউটিউবের কনটেন্ট ক্রিয়েটর থেকে সিনেমায় যাত্রা অনেকটাই কল্পনার মতো লাগে মাশরুর রাব্বি ইনান ওরফে কিটো ভাইয়ের কাছে। যদিও তিনি কাজল আরেফিন অমির ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ এবং মাহমুদুর রহমান হিমির ‘হাউজ নং ৯৬’-এ অভিনয় করেছিলেন।
তবে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে আলাপকালে কিটো ভাই জানান, একটা সময় রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের টিকেট কাউন্টারে চাকরি নিয়েছিলেন।
মাশরুর রাব্বি ইনান বলেন, ২০১৮ সালের শেষ দিকে যখন ঢাকায় প্রথম আসি তখন আমার অনেক স্ট্রাগল পিরিয়ড গেছে। টিউশনি করাতে না পেরে ২০১৯ সালে স্টার সিনেপ্লেক্সে কাস্টমার অফিসার হিসেবে চাকরি শুরু করি। দর্শকদের সিট দেখিয়ে দেয়া, কাউন্টার থেকে টিকেট বিক্রি করাই ছিল আমার কাজ। স্টুডেন্ট থাকায় ক্লাস করতে হতো, সিনেপ্লেক্সের শিফটের সঙ্গে টাইম মিলতো না বিধায় বেশীদিন চাকরিটা করতে পারি নাই।
আগামীতে সেই সিনেপ্লেক্সে তার অভিনীত সিনেমা ‘অন্তর্জাল’ প্রদর্শন হবে। বলছিলেন, এই বিষয়টি আমার নিজেকে ভীষণভাবে মোটিভেট করে। আগামীতে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে চাই। এতে নিজেকে নতুনভাবে পাবো। কথায় কথায় সেটা ভাবতেই ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছিলেন কিটো ভাই।
কোভিডকাল কিটো ভাইয়ের এগিয়ে যাওয়া অনেকটা সাপেবরের মতো লাগে। বলেন, অনেকের কাছে কোভিড খারাপ গেলেও আমার সুদিন এনেছে। করোনায় যখন কনটেন্ট বানাতাম তখন সহজেই বেশী মানুষের কাছে পৌঁছাত। পরে একটি চরিত্র হয়ে নাটকে অভিনয়কে সৌভাগ্যই বলবো। কিন্তু সিনেমায় অভিনয় করাটা আরও কঠিন ও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। আমি কতটা পেরেছি সেটা দর্শক ভালো বলতে পারবেন, তবে আমি পরিশ্রম করেছি।
তিনি বলেন, সিনেমায় অভিনয়ের প্রতিটা দৃশ্য অত্যন্ত নিখুঁতভাবে করতে হয়েছে। আমার সাথে যারা ছিলেন (সিয়াম, মিম, সুনেরা, এবিএম সুমন) প্রত্যেকেই অভিজ্ঞ শিল্পী। কিন্তু আমার জন্য সিনেমায় অভিনয় করা একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। দীপন দাদা আমাকে হাতেকলমে শিখিয়েছেন।
মাশরুর রাব্বি ইনান বলেন, ইন্টারনেট দুনিয়ায় আমার বিচরণ। সেই ইন্টারনেট কনসেপ্ট নিয়েই নির্মিত ‘অন্তর্জাল’। দীপন দা আমাকে খুঁজে বের করেছেন। আমার চরিত্রটা যেমন হওয়া দরকার তিনি আমাকে ভেবেছেন। সিনেমার জন্য তিনি যখন আমাকে ফোন করেন, অবাক লেগেছিল। বিশ্বাসই হচ্ছিল না। তবে হ্যাঁ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দীপন দার মতো নির্মাতা ডাক পাওয়া আমার কাছে অনেক বড় পাওয়া।
মাশরুর রাব্বি ইনানের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ২০১৩ সালের দিকে সালমান মুক্তাদির, শামীম হাসান সরকারদের দেখে ইউটিউবে ভিডিও বানানোর প্ল্যান করেছিলেন। ২০১৪ সালে তাদের অনুপ্রেরণায় নিয়মিত ভিডিও তৈরি করতে থাকেন। শুরুটা গানের ভিডিও দিয়ে হলে পরে কমেডি ভিডিও বানাতেন।
কিটো ভাই বলেন, তখন ভিডিও বানিয়ে চর্চার মধ্যে ছিলাম। ২০২০ সালে এসে আমার প্রথম ভিডিও ভাইরাল হয়। সেটি ছিল, ভাত খাওয়া বন্ধ নিয়ে কিটো ডায়েট ভিডিও। পরে ‘ও গেদু সমেস্যা কী’ গানের মাধ্যমে বেশী মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি। কিন্তু ক্যামেরার সামনে আসা এবং জনপ্রিয় হওয়ার আকাঙ্ক্ষাটা আমার ছোটবেলা থেকে ছিল। ছোট থেকে গান করতাম, স্টেজে পারফর্ম করতাম। তখন মনে হতো রুপালী পর্দায় কাজ করতে পারলে আরও বেশী মানুষ আমাকে চিনবে।