কিশোরগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের বেপরোয়া ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রতিবেদন প্রকাশ করার কারণে দৈনিক যুগান্তরের কিশোরগঞ্জ ব্যুরো প্রধান এ টি এম নিজামের ছেলে সালমান নিজামকে (৩১) অপহরণ ও হত্যা চেষ্টা চালানো হয়েছে।
বুধবার ৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে শহরের একরামপুর এলাকায় ওই কিশোর গ্যাংয়ের বড়ভাই খ্যাত গডফাদার র্যাবের মেজর পরিচয়দানকারী প্রতারক মাদক সম্রাট শুভ এবং তার বাহিনীর সশস্ত্র লোকজন এ ঘটনা ঘটায়।
এ সময় তাদের বেধড়ক মারপিট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখমের শিকার হন সালমান। তাকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ আড়াই শয্যা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তার নাকমুখ ও মাথার বিভিন্ন স্থানে গুরুতর রক্তাক্ত কাটা ও ফোলা জগম হয়। এমনকি ঘটনার পর থেকে তার শ্রবণ শক্তি আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। তার নাক-কান, মুখ ও মাথার বিভিন্ন পরীক্ষা -নিরীক্ষা চলছে।
এ ঘটনায় দৈনিক যুগান্তরের কিশোরগঞ্জ ব্যুরো প্রধান এ টি এম নিজাম বাদি হয়ে বুধবার কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারে নিজেকে বিশেষ বাহিনীর মেজর পরিচয়দানকারী প্রতারক শহরের নীলগঞ্জ নতুন স্টেডিয়াম রোড এলাকার জনৈক গোলাম মাওলার ছেলে মশিউর রহমান হুমায়ূনকে এবং আরও পাঁচজন অজ্ঞাত সন্ত্রাসীকে আসামি করা হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে উল্লেখ করা হয়, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে অফিস থেকে বাসায় ফিরে যুগান্তরের কিশোরগঞ্জ ব্যুরো প্রধান বুধবার সকালে ক্যামেরা ঠিক করাতে ঢাকা যাবেন বলে তার ছেলে সালমান নিজামকে জানান। এ কথা শুনে তার ছেলে প্রাইভেট কারে সিএনজি গ্যাস ভরে রাখতে বের হয়ে রাত আনুমানিক পৌনে ২ টার দিকে শহরের একরামপুর রেললাইন মোড়ের একটি দোকান থেকে টাকা তুলে রাস্তার ওপর আসার সঙ্গে সঙ্গে মশিউর রহমান শুভন ও অন্য পাঁচ যুবক তাকে ধরে অপহরণের চেষ্টা করে। কিন্তু সালমান জোরাজুরি করতে থাকলে মশিউর রহমান শুভ নিজেকে র্যাবের মেজর দাবি করে সবাইকে নিয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে। এক পর্যায়ে একটি বেয়নটের মতো ধারালো অস্ত্র বের করে তাকে খুন করতেও উদ্যত হয়।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক যুগান্তরের শেষ পৃষ্ঠায় কিশোরগঞ্জ-ভৈরব মহাসড়ক, ”বড় আতঙ্ক কিশোর ছিনতাইকারী চক্র” শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। আর এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকেই কিশোর গ্যাং ছিনতাইকারী চক্রের বড়ভাই খ্যাত অন্যতম গডফাদার শুভ যুগান্তর কিশোরগঞ্জ ব্যুরো প্রধানের ওপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আর তাই যুগান্তর ব্যুরো প্রধান ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি দেখে তার প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে কিংবা বড় ধরনের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসে।
কিন্তু তাকে না পেয়ে তার ছেলে সালমান নিজামকে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টা চালায় ওই ভুয়া মেজর শুভ ও তার বাহিনির লোকজন। ঘটনার পরপরই রাব কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়কের সঙ্গে কথা হলে এ নামে তাদের কোনো মেজর বা কর্মকর্তা নেই বলে জানান। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন।