শিরোপা অক্ষুণ্ণ রাখার অভিযানে মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আজ ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ঢাকার কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে মহারণ।
খেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি ওয়ার্ল্ড । অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ইউটিউব চ্যানেল স্পোর্টজ ওয়ার্কজ (Sportzworkz) এবং টফি অ্যাপেও ম্যাচটি দেখা যাবে। বাংলাদেশ বেতার খেলার চলতি ধারাবিবরণী প্রচার করবে।
ফাইনালে যদি নির্ধারিত ৯০ মিনিটের মধ্যে ফলাফল না আসে, সেক্ষেত্রে টুর্নামেন্টের বাইলজ অনুযায়ী সরাসরি টাইব্রেকার হবে। এ প্রসঙ্গে স্বাগতিক দলের কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেন, ‘আমি মেয়েদের পেনাল্টি শুটআউট অনুশীলন করিয়েছি।’
এবারের আসরে লিগপর্বে ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ভারতকে ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ। ফাইনালে আবারও সেই টিম ইন্ডিয়াকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে লাল-সবুজের দল। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে হওয়া প্রথম আসরে একই ব্যবধানে জিতে ট্রফি নিজেদের ঘরে তুলেছিল বাঘিনীরা।
দুই দলই ফাইনালের আগের দিন বুধবার শেষবারের মতো ম্যাচের ভেন্যুতে অনুশীলন সেরে নেয়। কারোরই নেই চোটজনিত কোনো সমস্যা।
অনুশীলন শেষে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার প্রান্তি বলেন, ‘ফাইনাল ম্যাচ খেলার আগে যতটুকু টেনশন থাকা দরকার, ততটুকুই টেনশন কাজ করছে। এর বেশি কিছু না।’
‘আসলে ফাইনালের আগে বেশি চাপ নেয়া ঠিক না। তাই আমরা বেশি চাপ নিচ্ছি না। আমরা যতটা পরিশ্রম করেছি, তার পরিপ্রেক্ষিতেই আমাদের শিরোপা জেতার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস আছে। ফলে আমরা শিরোপা জিততেই মাঠে নামব।’
ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে যে গোল করা সহজ হবে না, সেটি আফঈদা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন। যদিও তাদের ভয় পাওয়ার মতো কোনো কারণ তিনি দেখছেন না।
‘ফাইনালেও আমরা ওদের বিরুদ্ধে গোল করার খুব বেশি সুযোগ পাব না। এজন্য সুযোগ পেলে যেভাবেই হোক, সেটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে।’
‘সবাই আসলে ভারতকে যতটা শক্তিশালী মনে করে ও ভয় পায়, আসলে ওরা ততটা না। ওরা আমাদের মতোই খেলে। দুই দলের মধ্যে আমি তো কেমন পার্থক্য দেখি না। আশা করছি ওদের সঙ্গে আমরা ভালো খেলব এবং সেটার ফল মাঠেই দেখবেন। আমরা আমাদের খেলাটাই খেলব।’
ফাইনালের আগে শুরুর একাদশ সাজানো, ফরমেশন ঠিক করাসহ সকল কৌশল ঠিক করে রেখেছেন বাংলাদেশ কোচ টিটু। হোম অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগানোর ব্যাপারটিও তার মাথায় থাকছে। অনুশীলনের পর জানান নিজের অভিমত।
‘মেয়েরা জানে তাদের কী করতে হবে। ফাইনালে আমরা নিজেদের সেরাটা দেয়ারই চেষ্টা করবো। তবে ভারতকে হারানো কঠিন হবে। কেননা লিগপর্বে একবার ওদের সঙ্গে খেলেছি। ফলে ওরা আমাদের সম্পর্কে জানে। আমার মনে হয়, এখানে নার্ভ ঠিক রাখাটা একটা ব্যাপার হবে। সমশক্তির দলগুলোর মধ্যে খেলা হলে এখানে যে দল কম ভুল করবে, সে দলই জিতবে। তবে ভারত দলকে আমি সমীহ করছি। আমি মনে করি ফাইনাল ম্যাচের মানটা খুব উঁচুতে হওয়া উচিৎ। কেননা এই দুই দলের আগের ম্যাচটি খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছিল।’
‘মেয়েরা সবসময়ই এই মাঠে অনুশীলন করে। ফলে এই মাঠে ফাইনাল খেলাটাও তাদের জন্য সহজ। দেখা যাক, কি হয়। মেয়েদের দলের দায়িত্ব নেয়ার পর এই প্রথম কোনো শিরোপা জেতার কাছাকাছি রয়েছি। এতে অবশ্য তেমন রোমাঞ্চিত নই। কেননা নিজের অর্জনের চেয়ে আমি দেশের সাফল্যকেই প্রাধান্য দেবো।’
টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই বাংলাদেশকে সমীহই করছেন ভারতের কোচ শুক্লা দত্ত । নির্দিষ্ট কোনো খেলোয়াড়কে মার্কিং করে খেলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান । বার্তা দেন, তার দলের সবারই জয়ের মানসিকতার আছে।
‘কালকে ভীষণ ভাইটাল ম্যাচ। গ্রুপের ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে হেরেছিলাম। মেয়েরা বুঝতে পেরেছে, তাদের ভুলটা কোথায় ছিল। ফাইনালে আশাকরি তেমন কিছু হবে না।’
‘আমার মেয়েরা পর্যাপ্তে বিশ্রাম পায়নি ঠিক। কিন্তু এ নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। ফাইনাল খেলবে বলে মেয়েরা কোনো চাপে নেই। আমরা ট্রফি জিততে চাই।’