এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
ছোটপর্দার সুপারস্টার বলা হয় আফরান নিশোকে। গেল বছর ‘সুড়ঙ্গ’ দিয়ে বড়পর্দায় হলো তার দুর্দান্ত অভিষেক। এই অভিনেতা প্রচণ্ড ভালোবাসেন প্রয়াত কিংবদন্তী অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদিকে। তাকে গুরু মানেন। সেকথা বহু সাক্ষাৎকারে বলেছেনও নিশো।
শুধু তাই নয়, ব্যক্তিগত দর্শনের জায়গা থেকে নিজের কাজের জন্য পাওয়া সব পুরস্কার ফরীদিকে উৎসর্গ করেন। কেন তিনি এমনটা করেন, চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বেশ কয়েক বছর আগে নিশো বলেছিলেনও!
ব্যক্তিগত দর্শনের কথা বলে এ বিষয়ে নিশো সেই সময়ে বলেন,‘হুমায়ুন ফরীদি বড় অভিনেতা হওয়ার পরেও তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে কম। তাই আমার নিজস্ব ইচ্ছা আমার সকল পুরস্কার তাকে দেই। এটা আমার একধরনের প্রতিবাদ। উনি যে মাপের অভিনেতা তাকে সেই উঁচুমানের চরিত্রগুলো আমরা তাকে দিতে পারিনি।’
হুমায়ুন ফরীদির প্রতি নিশোর এমন নির্মোহ ভালোবাসার সাক্ষী হলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। এই প্রজন্মের একজন অভিনয়শিল্পীর এমন আচরণ জাদুকরের চোখে জল এনে দিয়েছে!
শুক্রবার (২৪ মে) ছিলো মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার-২০২৩ এর আয়োজন। যেখানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুয়েল আইচ। আর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সেরা অভিনেতার পুরস্কার নিতে দুই বার মঞ্চে উঠেন নিশো। একবার পাঠকদের ভোটে সীমিত কাহিনিচিত্র বিভাগে চ্যানেল আইয়ের ‘পুনর্জন্ম অন্তিব পর্ব’র জন্য এবং আরেকবার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে ‘সুড়ঙ্গ’র জন্য!
আর প্রতিবারই হুমায়ুন ফরীদির স্মৃতির প্রতি পুরস্কার উৎসর্গ করছিলেন নিশো। দর্শকসারিতে বসে যা দেখে আবেগাপ্লুত হন ফরীদি ভক্ত জুয়েল আইচ। পরে ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে প্রখ্যাত এই জাদুশিল্পী লিখেন, “ভালোবাসার মৃত্যু নেই। হুমায়ুন ফরিদী আজও আমার বুকের মধ্যে নড়েচড়ে কথা বলে। আজ আমি একজন অসাধারণ তরুণ অভিনেতাকে আবিষ্কার করলাম যে ফরিদীকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে। পরাজিত হতে যে এত সুখ, তা আমি এই প্রথম অনুভব করলাম।”
এরপর তিনি বলেন,“মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার-এর মহোৎসবে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা আফরান নিশো বারবার পুরস্কার নিতে মঞ্চে উঠছিল। প্রতিবার পুরস্কারটি হাতে নিয়ে উঁচু করে ধরে গভীর শ্রদ্ধাভরে চিৎকার করে সে তার পুরস্কারটি প্রত্যেকবার হুমায়ুন ফরিদীর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করছিল। অবিশ্বাস্য কাণ্ড! এমনটি জীবনে আমি এর আগে কখনো পৃথিবীর কোথাও দেখিনি। একজন প্রয়াত মহান শিল্পীর স্মৃতির প্রতি কতটা সশ্রদ্ধ ভালোবাসা থাকলে বর্তমান প্রজন্মের একজন শিল্পী হাজারো সেলিব্রিটির সামনে পাগলের মত এরকম কাজ করতে পারে তা ভাবাই যায় না।”
জুয়েল আইচ লিখেন,“নিশো যতবার এই পবিত্র কাজটি করছিল ততবার আমার চোখ ভিজে উঠছিল। ফরিদীকে আমি আজও পাগলের মতো ভালোবাসি। কিন্তু নিশো আমায় হারিয়ে দিয়ে জিতিয়ে দিল। এ সুখ আমি কোথায় রাখি!”