রুবেল হোসাইন: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষককে ‘উড়ো চিঠি’র মাধ্যমে গালাগাল ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
ওই তিন শিক্ষক হলেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বাধীন সেন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিছা পারভীন ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নিলোর্মী।
তিন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাধ্যমিক পর্যায়ের ইতিহাস বইসহ অন্যান্য বই লেখার সাথে জড়িত থাকায় তাদের কাছে অনেকগুলো উড়ো চিঠি এসেছে। বিশেষ করে মেসেঞ্জার, মেইল ও হোয়াটসঅ্যাপে তাদেরকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেওয়া হয়।
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিছা পারভীন বলেন, ‘আমাকে মেসেঞ্জার এবং মেইলে গালাগালি করছে, হুমকি দিচ্ছে। অথচ ওই পুস্তক তো লিখেছি ১১ জন মিলে। কেউ জানেও না যে কে কতটুকু লিখেছে। সমাজবিজ্ঞান অংশে কোনো দোষ থাকলেও আমরাই গালি খাচ্ছি। আমরা তো ইতিহাসের শিক্ষক, ইতিহাস অংশ লিখেছি। আমরা তিনজন ইতিহাস অংশটুকু লিখেছি। সমাজবিজ্ঞান অংশটুকু লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ অন্যান্যরা। স্বাধীন সেন, আমি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবাশীষ কুমার কুণ্ডু এরাই বেশি আক্রমণের শিকার হচ্ছি। স্বাধীন ভাইয়ের কাছে উড়ো চিঠি এসেছে, আমাকে মেইল করেছে এবং মেসেঞ্জারে প্রচণ্ড গালাগালি করে বলে প্রথমবারের মতো ফেসবুক ব্লক করে দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। শিক্ষামন্ত্রীও বিশ্ববিদ্যালয়কে আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যাওয়া-আসার জন্য প্রক্টরিয়াল গাড়িরও ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু আমি এমনিতেই যাওয়া আসা করি, যা হয় হবে।
অধ্যাপক শরমিন্দ নিলোর্মীও হুমকির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক স্বাধীন সেনের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।
জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এম শামীম কায়সার সাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়। এতে উক্ত ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।