
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আল-বেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইনের কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনার জেরে হলটির কর্মচারী নিয়োগ বোর্ড সভা স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার ১৫ নভেম্বর সকাল ৮ টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। বিকেল সাড়ে ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত তালা লাগানো ছিল। তালা লাগিয়ে দেওয়ায় ওইদিন হলের সবধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে শিক্ষার্থীদের তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হলের কর্মচারীদের সূত্রে জানা যায়, সকাল ৮ টার সময় প্রাধ্যক্ষের কক্ষে ঝাড়ু দিচ্ছিলেন এক কর্মচারী। সেমুহূর্তে ছাত্রলীগের ১০/১২ জন নেতাকর্মী তাকে প্রাধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে জোরপূর্বক কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন। এসময়, নেতাকর্মীরা কর্মচারীদের তালা খুললে মারধরেরও হুমকি দেন।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে হলের নিয়মিত দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করে আসছেন প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইন। বছরে গুরুত্বপূর্ণ কোন ইভেন্ট ছাড়া তিনি হল পরিদর্শনে আসেন না। শিক্ষার্থীদের যেকোন প্রয়োজনে প্রাধ্যক্ষের বাসায় যেতে হয়। এছাড়া, হল সংলগ্ন রাস্তা মেরামত করা, পুকুর সংস্কার এবং হলে ধুলাবালি প্রবেশে একাধিকবার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানালেও ব্যবস্থা নেয়নি হল প্রশাসন। ফলে বাধ্য হয়ে তারা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

তবে হল ছাত্রলীগের একাধিক নেতা সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার বিকেলে হলটির একটি কর্মচারী নিয়োগ বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। যেখানে দুজন কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ছাত্রলীগের সুপারিশপ্রাপ্ত এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে অস্বীকার করায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. এনামুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক চিন্ময় সরকারের নেতৃত্বে হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগিয়ে দেন তারা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. এনামুল হক বলেন, তালা লাগানোর সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের কয়েকটি দাবি অনেকদিন ধরে প্রাধ্যক্ষকে জানিয়ে আসলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি। এজন্য বাধ্য হয়ে তারা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে, কর্মচারী নিয়োগ বোর্ড সভার সাথে তালা লাগানোর কোন সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন চিন্ময় সরকার।
এদিকে, হলটির প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ওইদিন বিকেলে কর্মচারী নিয়োগ বোর্ড স্থগিত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে হলটির প্রাধ্যক্ষ সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, নেতাকর্মীরা আমাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আসার আগেই হলে তালা লাগিয়ে দেয়। এখন তারা পুকুর সংস্কার, রাস্তা মেরামতসহ যেসব সমস্যার কথা বলছে এগুলো আগে কখনো বলেনি। তাৎক্ষণিক আমি কিভাবে সমাধান করবো? দেখি, তাদের সাথে আলোচনা করে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করছি।
এসময়, কর্মচারী নিয়োগ বোর্ড সভাকে প্রভাবিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিজ্ঞাপন