ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের (ডব্লিউএফআই) সভাপতি ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং এবং অন্য অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। কমনওয়েলথ গেমসে দুবার এবং এশিয়ান গেমসে একবার স্বর্ণপদক জেতা নারী কুস্তিগির ভিনেশ ফোগাট তাদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ সামনে এনেছেন।
গত নয় মাসে এই নিয়ে পঞ্চমবারের মতো ভারতে নারী ক্রীড়াবিদদের যৌন হয়রানির মুখে পড়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে উঠে এলো।
ভিনেশ কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতিসহ কয়েকজন কোচের বিরুদ্ধে নারী কুস্তিগিরদের এবং পাশাপাশি জুনিয়র অ্যাথলেটদের ক্রমাগত যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন।
ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার থেকে দিল্লিতে অলিম্পিক পদকজয়ী বজরং পুনিয়া এবং সাক্ষী মালিকসহ মোট ৩০ জন শীর্ষ কুস্তিগির প্রতিবাদ সমাবেশ করছেন। দিল্লির যন্তর মন্তরে কুস্তি ফেডারেশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন দেশটির কুস্তিগিররা। বৃহস্পতিবারও অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
কুস্তিগির ভিনেশ ফোগাট বলছেন, জাতীয় দলের কোচরা নারী কুস্তিগিরদের বছরের পর বছর শ্লীলতাহানি করে আসছেন। কিছু বললেই ডব্লিউএফআই-এর কর্তাদের থেকে মৃত্যুর হুমকি পেতে হয়।
গত বছরের মে মাসে চেন্নাইয়ের বিখ্যাত অ্যাথলেটিক্স কোচ পি নাগরাজনের বিরুদ্ধে জাতীয় পর্যায়ের এক নারী দৌড়বিদকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। দুমাস পর আরও সাত ক্রীড়াবিদ একই ধরনের অভিযোগ উপস্থাপন করেন। পরে নাগরাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই মাসে জিমন্যাস্ট অরুণা বুদ্দা রেড্ডি অভিযোগ করেছিলেন, তার কোচ রোহিত জয়সওয়াল ২০২২ সালের মার্চে ট্রায়াল চলাকালীন তার সম্মতি ছাড়াই ভিডিওগ্রাফ করেছিলেন। তবে জিমন্যাস্টিক ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া জয়সওয়ালকে শাস্তি দেয়নি। ঘটনা তদন্তে ভারতের ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের প্যানেল গঠন করে। তদন্ত সত্ত্বেও জয়সওয়ালকে ভারতের কমনওয়েলথ গেমস দলের কোচ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে তাকে কোচের তালিকা থেকে সরানো হয়।
পরে জুনে ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের ফুটবল দলের সহকারী কোচ অ্যালেক্স অ্যামব্রোসকে নরওয়ের একটি প্রশিক্ষণ শিবির থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। অপ্রাপ্তবয়স্ক এক খেলোয়াড়কে যৌন হয়রানির দায়ে তাকে সেখান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। অ্যামব্রোস অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের স্কাউটিং প্রধানও ছিলেন। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি ফেডারেশনকে একটি আইনি নোটিশ দেন। ঘটনায় মামলা দায়ের হলে চার মাসেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
জুন মাসেই আসে আরেকটি অভিযোগ। স্লোভেনিয়ায় প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য অবস্থানকালে এক নারী সাইক্লিস্ট জাতীয় দলের প্রধান কোচ আর কে শর্মার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ সামনে আনেন। অভিযোগের কয়েকদিন পর, আরও তিনজন সাইক্লিস্ট অভিযোগ করেন যে, শর্মা তাদের বছরের পর বছর ধরে হয়রানি ও হুমকি দিয়েছিলেন। স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া শর্মার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।