কক্সবাজারে স্পা’র আড়ালে চলছে মাদক সেবন, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। এসব বন্ধে অভিযান চালিয়ে স্পা কর্মীসহ ৩৮ জনকে আটক করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আবিষ্কার করেছে বিশেষ সুড়ঙ্গ।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, পর্যটন জোনে কিছু সংখ্যক আবাসিক কটেজ এবং স্পা সেন্টার ঘিরে কিছু অপরাধী চক্র সক্রিয় রয়েছে। চক্রটির সদস্যদের হাতে নানা কৌশলে পর্যটকরা প্রতিনিয়ত ছিনতাই ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পর্যটকদের ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চালাচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক আপেল মাহমুদ বলেন, কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ সংলগ্ন এলাকায় আবাসিক কটেজ জোন গড়ে উঠেছে। সেখানকার সাইনবোর্ড বিহীন ৬ থেকে ৭ টি কটেজের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে পর্যটকদের কৌশলে জিম্মি করে ছিনতাই ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ নানাভাবে হয়রানি করার।
আপেল মাহমুদ জানান, রোববার মধ্যরাতে সেখানকার সাইনবোর্ড বিহীন ‘ঢাকার বাড়ী’ ও ‘শিউলি’ নামের দুইটি কটেজে ট্যুরিস্ট পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২১ জন নারী ও ১২ জন পুরুষকে আটক করেছে। অভিযান টের পেয়ে কটেজ দুইটির গোপন সিঁড়ি ও সুরঙ্গ দিয়ে আরও বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেছে। সেসময় ওই কটেজ দুটিতে কিছু গোপন কক্ষের সন্ধান পাওয়া যায় যেখানে পর্যটকদের জিম্মি করে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে ওইসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় করা হতো। না হলে চালানো হতো নির্যাতন।
তিনি বলেন, একই সময় কক্সবাজার শহরের কলাতলী মোড় সংলগ্ন ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট নামের আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে অনুমোদনহীন একটি স্পা সেন্টারের নারী পরিচালকসহ ৫ নারীকে আটক করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।হোটেলটির ভিতরে একটি গোপন কক্ষে স্পা সেন্টারের আড়ালে চলতো পর্যটকদের হয়রানি ও ব্লাকমেইলিং। আর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে আদায় করা হতো মোটা অংকের টাকা।
আপেল মাহমুদ বলেন, কক্সবাজার শহরে অনুমোদনহীন স্পা সেন্টার রয়েছে ৩৬ টি এবং লাইট হাউজ সংলগ্ন এলাকায় আবাসিক কটেজ রয়েছে দুই শতাধিক। শুধুমাত্র পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়ে আসছে। আর নিয়ন্ত্রণহীন এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত নানা অপরাধের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পর্যটন শিল্পের ওপর। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে এসব স্পার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।