বিভিন্ন যৌক্তিক দাবিতে হলিউড স্টুডিও কর্তৃপক্ষের সাথে বিগত কয়েক মাস ধরেই দফায় দফায় মিটিংয়ে বসছিলেন হলিউডের সাড়ে ১১ হাজার চিত্রনাট্যকাররা। কিন্তু তাদের দাবি অগ্রাহ্য করায় ধর্মঘটের ডাক দেন। এবার চিত্রনাট্যকারদের মতোই নিজেদের দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলনে নামলো হলিউডের শিল্পী, কলাকুশলীদের সংগঠন।
‘দ্য স্ক্রিন অ্যাক্টর গিল্ড’ (এসএজি) জানিয়েছিল, মার্কিন সময় বুধবার (১২ জুলাই) রাতের মধ্যে স্টুডিও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ না হলে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে রাস্তায় নামবেন। আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে সেই ধর্মঘটের রাস্তায় নামলেন তারা। যার কারণে কার্যত বন্ধ হয়ে গেল হলিউড ইন্টাস্ট্রির কাজ!
হলিউডের চিত্রনাট্যকারেরা কয়েক মাস আগেই বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে ধর্মঘট ডাকেন। বৃহস্পতিবার অভিনয়শিল্পীরাও ধর্মঘটে রাস্তায় নামায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন চিত্রনাট্যকাররা। এদিন অভিনয়শিল্পীদের আন্দোলনে নামার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে তাদের সমর্থনে নেটফ্লিক্স হলিউড অফিসের সামনে গিয়ে স্লোগানও দেন তারা।
স্টুডিও কর্তৃপক্ষের সাথে অভিনেতাদের কী কী দাবি নিয়ে আলোচনা হয়? যা মেনে নেওয়া হলো না! অপারগ হয়ে তারা রাস্তায় নামলেন? বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিনেতাদের একাধিক দাবি ছিলো। এরমধ্যে প্রথম দাবি ছিলো বেতন বাড়ানো নিয়ে। আর দ্বিতীয় দাবিটি ছিলো, কাজের বিকল্প হিসাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে বেছে না নেওয়ার শর্ত!
পাশাপাশি অনলাইন স্ট্রিমিং প্লাটফর্মগুলোকে জনপ্রিয়তা অনুযায়ি মুনাফা দেয়ার দাবিও জানানো হয়। আগে টেলিভিশনের জনপ্রিয় সিরিয়ালগুলো ভিউ অনুযায়ি অভিনেতাদের প্রণোদনা দিত। অভিনয়শিল্পীদের সংগঠনের অভিযোগ, নেটফ্লিক্স-সহ অন্যান্য অনলাইন স্ট্রিমিং প্লাটফর্মগুলো ভিউয়ের হিসেব পর্যন্ত দেয় না। ফলে কোনটি জনপ্রিয় হচ্ছে, তা বোঝাও যায় না। মুনাফার অংশ শেয়ার করাতো দূর!
ধর্মঘটের খবর পেয়ে লন্ডনে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহেইমার’ এর প্রিমিয়ার শো ছেড়ে অভিনেতাদের বেরিয়ে যেতেও দেখা যায়। হলিউডের সমস্ত স্তরের অভিনেতা এই ধর্মঘটে যোগ দিচ্ছেন বলে অভিনয়শিল্পী সংগঠনের দাবি।
ইউনিয়ন জানিয়েছে, ধর্মঘটের ফলে একদিকে যেমন শুটিং বন্ধ থাকবে, অন্যদিকে বড় বড় ছবির প্রিমিয়ারে অভিনেতারা উপস্থিত হবেন না। ছবির প্রমোশনেও কোনো অভিনেতাকে দেখা যাবে না।
শুক্রবার সকালে ক্যালিফোর্নিয়ায় নেটফ্লিক্স সদরদপ্তর ছাড়াও প্যারামাউন্ট, ওয়ার্নার ব্রস ও ডিজনির সামনে শিল্পী কুশলীদের জড়ো হওয়ার কথা। তবে স্টুডিওগুলোর প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন- ‘দ্য অ্যালায়েন্স অফ মোশন পিকচার এন্ড টেলিভিশন প্রডিউচারস’ (এএমপিটিপি) অভিনয়শিল্পীদের ধর্মঘটের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা বিবৃতি দিয়ে বলেছে ইউনিয়নের সিদ্ধান্ত ইন্ডাস্ট্রির ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল হাজার হাজার মানুষকে সংকটের দিকে নিয়ে যাবে।
অভিনয়শিল্পী ও লেখকদের দাবিগুলো অবাস্তব বলে মন্তব্য করেছেন ডিজনির সিইও। তিনি ধর্মঘটকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করেন,‘কোভিড অতিমারিতে ক্ষতি থেকে উত্তরণের চেষ্টায় থাকা ইন্ডাস্ট্রির জন্য এমন ধর্মঘট ক্ষতিকর।’