জার্মানি তাদের সর্বশেষ তিনটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে, যার মধ্য দিয়ে ছয় দশকেরও বেশি সময় পর দেশটির পারমাণবিক বিদ্যুৎ যুগের সমাপ্তি ঘটল।
সিএনএন জানায়, জার্মানির পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত। ২০০৩ সাল থেকে দেশটিতে ১৬টি চুল্লি বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ করে দিবে দেশটি।
এমসল্যান্ড, ইসার-২ এবং নেকারওয়েস্টেইম, শনিবার এই তিনটি প্ল্যান্ট বন্ধ করার মাধ্যমে ২০ বছর ধরে চলমান পরিকল্পনার সমাপ্তি ঘটবে। গত বছর জার্মানির উৎপাদিত বিদ্যুৎ এর ছয় শতাংশ এসেছিল এ তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।
২০০২ সাল থেকেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের চেষ্টায় ছিল জার্মানি। ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্রে বিপর্যয়ের পর জার্মান সরকার পারমাণবিক বিদ্যুৎ পুরোপুরি বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও অনেকের কাছেই পারমাণবিক কেন্দ্র বন্ধ করা বোকামি। তবে পরিবেশের কথা চিন্তা করেই এই উদ্যোগের সূচনা হয়েছিল জার্মানিতে।
জার্মানির ভোক্তা সুরক্ষা মন্ত্রী এবং গ্রিন পার্টির সদস্য স্টেফি লেম বলেছেন, পারমাণবিক শক্তি পরিবেশবান্ধব বা টেকসই নয়। আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক নতুন যুগের সূচনা করছি। এই পরিকল্পনা কয়েক দশক ধরে চলছে।
এদিকে বন্ধ হওয়া কেন্দ্রগুলোর তেজস্ক্রিয় বর্জ্য কোথায় রাখা হবে, তা খুঁজে বের করতে কমিটি গঠন করেছে জার্মান সরকার। ২০৩১ সালের মধ্যেই এসব ক্ষতিকর বর্জ্য ধ্বংসের জন্য একটি স্থান খুঁজে বের করতে হবে দেশটিকে।
জার্মানির অর্থনীতি ও জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আমাদের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য। এমন একটি স্থান খুঁজে বের করা যেখানে বছরের পর বছর ধরে বর্জ্যগুলো নিরাপদে থাকবে।
এ বিষয়ে গ্রিনপিসের মুখপাত্র পল-মারি মানিয়ের বলেছেন, এটি কয়েক দশক ধরে জার্মানি এবং বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্রের প্রতিবাদ করা লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য একটি দুর্দান্ত অর্জন।
জার্মানির নবায়নযোগ্য শক্তি ফেডারেশনের (বিইই) সভাপতি সিমোন পিটার বলেন, জার্মানির পরমাণু শক্তির ব্যবহার থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।
এদিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও বন্ধ করে দেয়ার পথে রয়েছে জার্মানি। জার্মানি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কয়লা আমদানিকারক দেশ। দেশটি ঘোষণা দিয়েছে ৮৪টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিবে।