চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

ভাষাসংগ্রামী ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. আজিজারের স্বীকৃতি জুটল না জীবদ্দশায়

৫২’এর ভাষা আন্দোলনে ও মুক্তিযুদ্ধে জয়পুরহাটে যে ক’জন ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন তাদেরই একজন  ছিলেন ডা. আজিজার রহমান। কিন্তু ভাষা সংগ্রামের দীর্ঘ ৭১ বছরে ভাষাসৈনিক হিসেবে স্থানীয় কিছু সম্মাননা মিললেও জাতীয়ভাবে কোনো স্বীকৃতি মেলেনি তার।

১৯২৮ সালের ৪ মার্চ নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ঝারঘড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ডা.মো. আজিজার রহমান।  পরবর্তীকালে জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন এই  ভাষাসংগ্রামী। তিনি প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে ১৯৪৮ সালে আক্কেলপুর হাইস্কুলে ভর্তি হন। সেখানে তিনি নবম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় সম্পৃক্ত হন রাজনীতিতে।

Bkash July

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ঢাকায় ছাত্র হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে ২২ ফেব্রুয়ারি দেশের অন্যান্য স্থানের মতো আক্কেলপুরে যে ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয় তাতে অনেকের সঙ্গে তিনিও নেতৃত্ব দেন।

৬ দফা আন্দোলন, ১১ দফা আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ এর নির্বাচনসহ ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন তিনি । যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে প্রশিক্ষণ নিতে যান ভারতের আসাম রাজ্যের তেজপুর ক্যাম্পে। প্রশিক্ষণ পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধেও একনিষ্ঠ সংগঠক হিসেবে কাজ করেন তিনি। ২০০০ সালের ৭ অক্টোবর প্রকাশিত মুক্তিবার্তায় তার নাম উল্লেখ আছে। তার মুক্তিবার্তা নং-০৩০৫০৪০৩৮৫।

Reneta June

তারপরেও ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি মেলেনি তার। ভাষাসংগ্রামী আজিজার রহমান গত রোববার তাঁর নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর আগে তাঁর জীবদ্দশায় ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি চেয়েছিলেন তার পরিবার।

ব্যক্তিগত জীবনে ডা. আজিজার ছিলেন ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। সৎ, নির্লোভ, দেশপ্রেমিক ও ত্যাগী রাজনীতিবিদ হওয়ায় তাঁকে ২ বার কারাবরণ করতে হয়। প্রতিষ্ঠা করেন আক্কেলপুর আদর্শ ক্লাব ও পাঠাগার ।  পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। এলাকাবাসি তাঁকে আজিজার ডাক্তার নামেই চিনেন।

বয়স ও বার্ধক্যের কারণে  ঠিকমতো কথা বলতে ও চলাফেরা করতে পারতেন না তিনি। নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে অনেকেই তাঁর খোঁজ-খবর নিলেও বাকি সময় তিনি থাকতেন নীরবে-নিভৃতে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। পরে তাঁকে মহব্বতপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে  দাফন করা হয় বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

এমন একজন অকুতোভয় ভাষাসংগ্রামী ও মুক্তিযোদ্ধার স্বকৃতিহীন মৃত্যু জাতির জন্য লজ্জার এমনই অভিমত জানিয়েছেন জেলার বিশিষ্টজন ও দেশপ্রেমিকগণ।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View