রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে। রপ্তানির জন্য ইউক্রেনের বন্দরগুলোতে আসা খাদ্যশস্য আটকে রেখে রাশিয়া বিশ্বের খাদ্যব্যবস্থাকে জিম্মি করেছে বলে অভিযোগ করেছে পশ্চিমারা।
রাশিয়া বলছে, কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেন মাইন পেতে রাখায় জাহাজগুলো বন্দর ছাড়তে পারছে না। তবে, দু’একদিনের মধ্যেই কৃষ্ণসাগর খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে ক্রেমলিন।
ইউক্রেন থেকে আমদানি করা গমের ওপর নির্ভরশীল বিশ্বের প্রায় ৪০ কোটি মানুষ। যা বিশ্বের মোট চাহিদার ১০ শতাংশ।তিন মাসের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। রণাঙ্গনে লড়াই চলাকালেও থেমে নেই সেখানকার কৃষিকাজ। রপ্তানীর জন্য প্রস্তুত রাখা আগের মৌসুমের শস্যই বন্দর ছাড়তে পারেনি, নতুন উৎপাদিত শস্যও চলে এসেছে। তাই বন্দরে থাকা শস্যগুলো পচনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ইউক্রেনের শস্য বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে এ মুহূর্তে তারা ৭ কোটি মেট্রিক টন গম রপ্তানি করতে প্রস্তুত। তবে, রুশ হামলার পর থেকে মারিওপোল ও খেরসনসহ অ্যাজভ ও কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দরগুলো বন্ধ থাকায় ৭০টির বেশি জাহাজ আটকে পড়েছে, যার ৯৫ শতাংশই বিদেশি।
মিশর এবং সোমালিয়া মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ গম ইউক্রেন-রাশিয়া থেকে আমদানি করে। গমের জন্য ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল আরো অনেক দেশ।
বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে রাশিয়ার ভূমিকাকে ইচ্ছাকৃত বলছে পোল্যান্ড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে স্টালিন এ অঞ্চলে এমনটিই করেছিলেন বলছেন পোলিশ প্রেসিডেন্ট। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করছে রাশিয়া। কিন্তু, রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতেই মাইন পেতে রাখার দাবি করেছে কিয়েভ।
জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা-ডব্লিউএফপি বলছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এতোবড় খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হয়নি বিশ্ব। সামনে খারাপ সময় অপেক্ষা করছে বলেও সতর্কতা সংস্থাটির।
শুধু গম বা খাদ্যপণ্যই নয়, করোনা মহামারির পরপরই ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে। এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে বরাবরের মতো দরিদ্র দেশগুলোকেই কঠিন বাস্তবতা মোকাবেলা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।