দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পানি ও গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে হাজারও পরিবার।
চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা যায়: সিলেট, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটে তিস্তাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজারও পরিবার।
এরমধ্যে সিলেটে সীমান্ত নদী সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। পানি বাড়তে থাকায় গোয়াইনঘাট উপজেলার সাথে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা আবারও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার, ও জৈন্তাপুরে সারি নদীর পানি ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে ১১৫, কানাইঘাটে ৪৫ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
একই অবস্থা সুনামগঞ্জেও। সেখানে জেলা সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক এই ৫ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি সবচেয়ে নাজুক হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক পরিবার। বিপৎসীমার উপরে বইছে জেলার সবক’টি নদীর পানি। সকালে সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। পানি বাড়ায় জেলার ৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ছাতক ও তাহিরপুর উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। রাতে দোয়ারাবাজার উপজেলার জীবনপুর গ্রামের পাশে পানির স্রোতে ভেসে গেছে একটি ব্রীজ। এছাড়া কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের প্রায় সব নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে।
এমন অবস্থায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ধান, পাট, সবজী, ভূট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের খেত। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থাও প্রায় অচল হওয়ার পথে। বন্যা কবলিত এলাকায় অতি দ্রুত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সরকারি সহযোগিতা সেক্ষেত্রে এখনও অপ্রতুল বলেই প্রতীয়মাণ। বন্যার্ত মানুষের জন্য সরকারি সহায়তার পাশাপাশি সবাইকে যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসার জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।