সুযোগ ছিল তিন দলের সামনে। দৌড়ে ছিল উরুগুয়ে, ঘানা এবং সাউথ কোরিয়া। আগেই নকআউট পর্বের টিকিট কেটে রেখেছিল পর্তুগাল। এইচ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ডে খেলবে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দল। তাদের হারিয়ে সঙ্গী রানার্সআপ সাউথ কোরিয়া। গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে ঘানা এবং উরুগুয়ে।
শুক্রবার গ্রুপপর্বের শেষ রাউন্ডে সাউথ কোরিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছে পর্তুগাল। অন্য ম্যাচে ঘানার বিপক্ষে জয় পেয়েছে উরুগুয়ে, ২-০ গোলে। তাতেও মেলেনি নকআউটের টিকিট সুয়ারেজ-কাভানিদের।
তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল। এক জয়, এক ড্র ও এক হারে রানার্সআপ সাউথ কোরিয়া, জমাতে পেরেছে ৪ পয়েন্ট। সমান ৪ পয়েন্ট ও গোল ব্যবধান একই থাকলেও আসরে কম গোল দেয়ায় গ্রুপের তিনে থেকে শেষ করল উরুগুয়ে। ঘানা তিন পয়েন্ট তুলে শেষ করল আসর।
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে এইচ গ্রুপের ম্যাচটিতে পর্তুগাল ছয় পরিবর্তন নিয়ে নামে। সবচেয়ে কম বয়সে (১৯ বছর ৩৩ দিন) পর্তুগিজদের হয়ে অভিষেকের নজির গড়েন অ্যান্তোনিও সিলভা।

পঞ্চম মিনিটেই গোল পায় পর্তুগাল। মাঝ মাঠ থেকে সতীর্থের লম্বা পাসে বল পান ডিয়েগো দালোত। ডান প্রান্ত থেকে দালোতের পাসে বল পেয়ে ডান পায়ের দারুণ ফিনিশিংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন রিকার্ডো হোর্তা।
ম্যাচের ১৭ মিনিটের মাথায় সং হিউং-মিনের ক্রসে বল পাওয়া চো জিউ-সাংয়ের হেড প্রতিহত করেন পর্তুগিজ গোলরক্ষক ডিয়েগো কস্তা। ফিরতি বলে কিম জিন-সু বল জালে জড়ালেও তিনি অফসাইডে থাকায় গোল বাতিল হয়।
এরপর ২৭ মিনিটে কর্নার কিকে বল নিয়ে বাঁ-পায়ে শুয়ে পড়ে নিশানাভেদ করে সাউথ কোরিয়ার হয়ে সমতা টানেন কিম ইয়ং-গিউন। দুই মিনিট পর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শট ঝাঁপিয়ে দারুণ সেভ করেন কোরিয়ান গোলরক্ষক কিম সেউং-জিউ। লাইন্সম্যান এ সময় অবশ্য অফসাইডের পতাকা তুলেছিলেন।
ম্যাচে ১২ মিনিট পর ভিতিনহার দেয়া ডান পায়ের দূরপাল্লার কিক কিম সেউং-জিউ ঠেকান। ফিরতি বলে হেড করেও বল জালে পাঠাতে পারেননি রোনালদো। বিরতির পর ৬৫ মিনিটে মিনিটে রোনালদোকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেন কোচ ফের্নান্দো সান্তোস।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে পর্তুগালকে হতভম্ব করে লিড পায় সাউথ কোরিয়া। পাল্টা আক্রমণ থেকে প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে দারুণ পাস দেন হিউং-মিন। বল আদায় করেই ডান পায়ে বল জালে প্রবেশ করান হাং হি-চান। শেষ মুহূর্তের ওই গোলেই এশিয়ার দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোতে পা রাখে কোরিয়া।
অন্যদিকে, স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ আরেক ম্যাচের ২১ মিনিটে আন্দ্রে আইয়ু স্পট কিকে গোল করতে না পারায় লিড মেলেনি ঘানার। বক্সের ভেতর মোহাম্মেদ কুদুস বল নিয়ে ঢুকে পড়েন। বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে বল ধরতে যান উরুগুয়ের গোলরক্ষক সার্জিও রোচেট। এ সময় দুজনের সংঘর্ষে কুদুস পড়ে যান। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান।
উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা তর্কে জড়িয়ে পড়েন সেসময়। এক পর্যায়ে হলুদ কার্ড দেখেন ডারউইন নুনেজ। ২১ মিনিটে আন্দ্রে আইয়ুর কয়েক পা হেঁটে নেয়া দুর্বল শট বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে রোচেট প্রতিহত করেন।
দুই মিনিট পর নুনেজ গোলের সহজ সুযোগ হারান। সালিসুকে কাটিয়ে গোলরক্ষককে একা পেয়ে ভলি করলেও তা জালের ঠিকানায় যায়নি। ২৬ মিনিটে ভাঙে ডেডলক। নুনেজের ক্রসে বল পাওয়া লুইস সুয়ারেজের শট ঠেকিয়ে দেন ঘানার গোলরক্ষক লরেন্স আতি। ফিরতি বলে হেডে নিশানাভেদ করেন জর্জিয়ান ডি আরাসকেটা। তাতে কাতার বিশ্বকাপে প্রথম জালের দেখা পেয়ে লিড নেয় উরুগুয়ে।
ছয় মিনিট পর নুনেজের কাছ থেকে বল পান সুয়ারেজ। তার বাড়ানো বল নিয়ে আরাসকেটা আবারও গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। প্রথমার্ধে ২-০ গোলের লিড নিয়ে উরুগুয়ে মাঠ ছাড়ে।
পরে একবার বক্সের ভেতর নুনেজকে চ্যালেঞ্জ করেন ডানিয়েল আমার্তি। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি জানিয়ে দেন পেনাল্টি হয়নি। শেষদিকে একের পর এক আক্রমণ গড়লেও ঘানার ডিফেন্স ভাঙা ছিল কষ্টসাধ্য। গোলরক্ষকও ছিলেন অবিচল। আর গোল না পাওয়ায় প্রথম রাউন্ডে শেষ হয়ে যায় উরুগুয়ের বিশ্বকাপ মিশন।