চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

জর্ডানের ছবি ‘ফারহা’কে ঘিরে বিতর্ক, নেটফ্লিক্স থেকে সরানোর দাবি

অস্কারে পাঠানো জর্ডানের ছবি ‘ফারহা’কে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব নিয়ে তৈরি কম বাজেটের এই ছবিটি নির্মাণ করেছেন ডারিন জে সাল্লাম।

‘ফারহা’ ছবিটি গত বছর টরন্টো চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছিল। এরপর অংশ নিয়েছে রোম, বুসান, গোথেনবার্গ ও লিওন সহ একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে। সমালোচকরা ছবিটি খুবই পছন্দ করেছেন। ছবির গল্পে মুগ্ধ হয়েছেন তারা। কিন্তু ছবি নিয়ে আপত্তি তুলছেন ইসরায়েলিরা। তাদের মতে, ছবিটি ইচ্ছাকৃত ভাবে ইহুদিদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

Bkash July

ছবির গল্প একজন ১৪ বছরের কিশোরীকে ঘিরে যে ফিলিস্তিনের ছোট একটি গ্রামে থাকে। মেয়েটি তার সমাজের পুরুষতান্ত্রিক নানা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। ইসরায়েলি বাহিনী যখন তাদের গ্রামে প্রবেশ করে, তখন তার বাবা তাকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে নিরাপত্তার জন্য। সেই বদ্ধ ঘরের ভেতরে বসেই মেয়েটি ইসরায়েলি সৈন্যদের নৃশংসতা দেখে।

এবছর জর্ডান থেকে অস্কারের আন্তর্জাতিক ফিচার ক্যাটাগরিতে পাঠানো হয়েছে ছবিটি। ফেস্টিভ্যাল মাতিয়ে নেটফ্লিক্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ‘ফারহা’। ১ ডিসেম্বর থেকে নেটফ্লিক্সে দেখা যাচ্ছে এই ছবি। এরপরেই বিতর্কের শুরু।

Reneta June

‘ফারহা’ নির্মাতা সাল্লাম বলেন, “দিনটি ছিল ২৯ নভেম্বর, নেটফ্লিক্সে মুক্তির ৪৮ ঘণ্টা আগের ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে ফোন সচল করা মাত্রই ফোন, ইমেইল, মেসেজ, মিস কল ও সামাজিক মাধ্যমের পোস্টের বন্যা বয়ে গেল। বেশিরভাগই জঘন্য ভাষার। ‘সন্ত্রাসী মুসলিম’, ‘নাৎসি’ সহ আরও অনেক বিদ্বেষপূর্ণ কথা। তাদের মতে সিনেমাটিতে ইসরায়েলের সৈন্য ও মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে।”

নেটফ্লিক্স থেকে ছবিটি নামিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে অনলাইন পিটিশনও শুরু হয়েছে। আরেকজন ডাক দিয়েছেন সবাই মিলে যেন আইএমডিবিতে কম রেটিং দিয়ে ‘ফারহা’র রেটিং কমিয়ে দেয়। ইসরায়েলের বেশ কয়েকজন গণ্যমান্যও ‘ফারহা’ বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন।

ইসরায়েলের লেখক ও চিত্রগ্রাহক লরা বেন-ডেভিড বলেছেন, তিনি নেটফ্লিক্স সাবস্ক্রিপশন বাতিল করে দেবেন। ইনস্টাগ্রামে ইসরায়েলের মডেল নাটালি দাদন তার ফলোয়ারদের অনুরোধ করেছেন নেটফ্লিক্স বর্জন করার জন্য।

নির্মাতা বলেন, ‘এসবই হয়েছে ছবিটি নেটফ্লিক্সে প্রকাশের আগেই, যখন কেউ ছবিটি দেখার প্রশ্নই ওঠে না। অথচ ততক্ষণে আইএমডিবিতে ৭০০ জনের বেশি মানুষ রেটিং ১ দিয়ে ফেলেছে। খুব অবাক হয়েছি।’

এরপরেই রাজনীতিবিদরাও সমালোচনা শুরু করে। ইসরায়েলের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী দাবি বলেন, ছবিটিতে ইসরায়েলের সৈন্যদের ভুলভাবে দেখানো হয়েছে।’ ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে উস্কানি দেয়ার জন্য এই ছবি তৈরি হয়েছে।’ ইসরায়েলের গণমাধ্যমও অসংখ্য লেখা প্রকাশ করা শুরু করে, যেগুলোর সবগুলোতেই একই অভিযোগ তোলা হয়েছে।

ছবির প্রযোজক দীমা আজার বলেন, ‘ছবিটি এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের নানা দেশে ঘুরেছে, পুরস্কার জিতেছে, দেখানো হয়েছে। এরপর যখন নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়ার সময় হলো, তখনই বিতর্ক শুরু হলো। এটা কিছুতেই কাকতালীয় হতে পারে না।’

বিতর্ক মূলত একটি দৃশ্যকে ঘিরেই। ফারহার বদ্ধ করে বসে ইসরায়েলি সৈন্যদের নৃশংসতা দেখা। তবে কেউ কেউ ছবির কাঠামো নিয়েও আপত্তি তুলেছেন। তাদের মতে, একজন কিশোরী মেয়েকে লুকিয়ে রেখে ইচ্ছাকৃত ভাবে অ্যান ফ্রাঙ্কের গল্পকে ভাবনায় আনা হয় এবং দর্শকদের নাৎসিদের সাথে ইসরায়েলিদের তুলনা করতে বাধ্য করা হয়।

সূত্র: হলিউড রিপোর্টার 

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View