চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ই-ভোট চায় জাকের পার্টি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোট চায় জাকের পার্টি। পাশাপাশি প্রচারে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিসহ ৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে দলটি।

বুধবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) এর সঙ্গে সংলাপে বসে এমন প্রস্তাবনা দেয় জাকের পার্টি।

সংলাপে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শামীম হায়দারের নেতৃত্বে নয় সদস্যের প্রতিনিধি দল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

লিখিত আকারে প্রস্তাবনাটি উত্থাপন করেন শামীম হায়দার।

অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা
অবাধ ও উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠানে গণতন্ত্রের গতিশীল ধারা ও অনুকূল পরিবেশের কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিছু সময় আগে গণতন্ত্র ও অনুকূল পরিবেশ বিষয়ে কথা বলা যুক্তিসঙ্গত হবে না। নির্বাচনের ছয় মাস আগে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানিমূলক আচরণ যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্লকচেইন টেকনোলজি এবং ই-ভোটিং
নির্বাচনে ভোট দান প্রক্রিয়ায় ইভিএমের কথা বলা হচ্ছে। বলতেই হয়, ইভিএম প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা প্রশংসনীয়। কিন্তু ইভিএম পুরো নিশ্ছিদ্র বা নিরাপদ নয়। কারণ মনে রাখতে হবে, সবাই স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি নয়। কাজেই যারা ইভিএম টেকনোলজি তৈরির সঙ্গে কাজ করছেন, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির কেউ যদি এর ভেতরে প্রবেশ করে টেকনোলজির সুক্ষ পরিবর্তন ঘটিয়ে দেয়, তাহলে নৌকায় ভোট দিলে তা ধানের শীষে বা অন্য প্রতীকে গিয়ে গণনা হবে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই ইভিএম পুরো নিরাপদ নয়।

নির্বাচনের সময় যেভাবে ভোটকেন্দ্র দখলে হানাহানি, মারামারি, আহত কিংবা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে, তা স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়া উচিত। ভোট গ্রহণে বা নির্বাচনে দেশবাসীর রক্ত ঝড়বে, নিহত হবে- তা কোনোটাই সুখকর সংবাদ হতে পারে না। এ ধারাবাহিকতা গণতন্ত্রের মসৃণ অগ্রযাত্রা ব্যাহত করে এবং এই ধারা নির্বাচনকে যেমন প্রশ্নবিদ্ধ করে তেমনি ভাবে এর ব্যাপকতায় গণতন্ত্রের ভবিষ্যত অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে পারে। এ ধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনা কিন্তু বৃহৎ বিপর্যয়ের বীজ বপন করে। তাই নির্বাচনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে ব্লকচেইন প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ই-ভোটিং প্রক্রিয়ায় ঘরে বসে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা এখনই গ্রহণ করা উচিত। তা না হলে, ভোটদান কে কেন্দ্র করে এ ধরনের হানাহানি, মারামারি ও দুঃখজনক হত্যাকাণ্ড ঘটতে থাকবে।

ইতোমধ্যে এসব কর্মকাণ্ডের কারণে ভোটারদের নিরাপদ ভোট প্রয়োগের পথ ধীরে ধীরে রূদ্ধ হয়েছে এবং এ ধারা অব্যাহত থাকলে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আকাঙ্খা বিনষ্ট হবে, যা ইতোমধ্যেই আমরা লক্ষ্য করছি।

বলার অপেক্ষা রাখে না, অ্যাপস এর মাধ্যমে যদি টাকা লেনদেন করা যায় তবে ই-ভোটিং এর মাধ্যমে নিরাপদ ভোট দেওয়ার নিরাপদ ব্যবস্থা এবং ভোটারদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা যাবে না কেন? অ্যাপস এর মাধ্যমে ঘরে বসে ভোটদানের সুযোগ পেলে সামগ্রিকভাবে ভোটদানের প্রক্রিয়ার চিত্র পাল্টে যাবে।

নাসডাক যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক পৃথিবীর সর্ববৃহৎ স্টক এক্সচেঞ্জ। সম্প্রতি সেখানে এজিএম হয়েছে এবং নির্বাচন হয়েছে ব্লকচেইন প্রযুক্তির ভিত্তিতে ই-ভোটিং এর মাধ্যমে। ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটাইলাজেশন সাফল্যের বর্তমান পর্যায়ে ই-ভোটিং পদ্ধতি অবশ্যই বাস্তবায়ন করা উচিত এবং তা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগানকে অর্থবহ করবে। আর তাই ডিজিটাল বাংলাদেশে ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড হোক এটাই জাকের পার্টি চায়।

সরকারি প্রচার মাধ্যমে সম অধিকার
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সরকারি প্রচার মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর নিজ নিজ দলের কর্ম পরিকল্পনা ও বক্তব্য তুলে ধরার সমান সুযোগ দিতে হবে। যাতে দেশবাসীর সামনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে সব দলের সমঅধিকার নিশ্চিত হয়। এতে জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে আরও ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হবে।

নিবন্ধিত দলগুলোর স্ব-ঘোষিত ভোটারদের ডাটাবেজ তৈরি এবং তা প্রকাশের জন্য নির্বাচন কমিশনে জমাদান
নির্বাচনে অংশগ্রহণেচ্ছু দলগুলোর ভোটের আগে গভীর আশা আর ফলাফলের পরে তীব্র অসন্তুষ্টির অবসানে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ দলের সদস্য ও সমর্থক ভোটারদের ছবি ও সই সম্বলিত ডাটাবেজ তৈরি করার আহ্বান জানাবে। এতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজ নিজ দলের ডাটাবেজ তৈরি করবে এবং নির্বাচন কমিশনেও তা জমা দেবে।

নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ছয় মাস আগে এই ডাটাবেজ অ্যাপের মাধ্যমে জনগণের কাছে প্রকাশ করবে। ফলে রাজনৈতিক দলগুলোর ভোট ব্যাংক সম্পর্কে আগে থেকেই জানা হয়ে যাবে।