দেশে ডেঙ্গু সংক্রমণ পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অবনতি হলেও এখনও ‘হেলথ ইমার্জেন্সি’ ঘোষণার অবস্থা তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন: এমন তো হচ্ছে না যে হাসপাতালে গিয়ে ডেঙ্গু রোগীরা সেবা পাচ্ছে না, তাহলে কেন হেলথ ইমারজেন্সি ঘোষণা করতে হবে? আমি মনে করি হেলথ ইমারজেন্সির সময় এখনো আসেনি। এই অবস্থায় ডেঙ্গু সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
শনিবার ২২ জুলাই দুপুরে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ড পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান। এ সময় তিনি রোগীদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশে গত কিছুদিন ধরে আবারও ডেঙ্গু সংক্রমণের প্রভাব বাড়ছে। তবে ঢাকায় রোগীর সংখ্যা স্থিতিশীল থাকলেও এখন ঢাকার বাইরে রোগী বাড়ছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা দ্রুতই এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।
তিনি বলেন, আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু মোকাবিলায় যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছি। পাশাপাশি দুই সিটি করপোরেশনের ডেঙ্গু প্রতিরোধে যথেষ্ট কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে ঢাকাসহ সারাদেশে সাড়ে ২৮ হাজার ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত। এরমধ্যে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগের সংখ্যা সাড়ে ১৭ হাজার। আর ঢাকার বাইরে সাড়ে ১০ হাজারের একটু বেশি।
তিনি আরও বলেন, এ বছর দেশজুড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৫৬ জন। যার মধ্যে ঢাকাতেই মৃত্যুবরণ করেছেন ১২২ জন। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। ঢাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা যেমন বেশি, সে তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি। আমাদের দেশে বর্তমানে ৬০টি জেলায় ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
দুই সিটি করপোরেশনের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, বেশ কিছু এলাকা ডেঙ্গুর হটস্পটে পরিণত হয়েছে। এই হটস্পটগুলোতে দ্রুততার সাথে মশা নিয়ন্ত্রণ করুন। আর নয়তো ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে। হাসপাতাল প্রস্তুত, তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় মশা মারার ওপর জোর দিতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, কলকারখানা এবং অফিসগুলোতেও লার্ভা জমছে, এগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্প্রে করার উদ্যোগ নিতে হবে।
এডিস মশা মারার ওষুধ কতটুকু কার্যকর হচ্ছে তা দেখার আহ্বানও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নিয়াতুজ্জামান।