জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এর অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহত আব্দুল কুদ্দুস (৩০) ও এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর ভ্রুণ হত্যার ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফ্রন্ট। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ভুক্তভোগী পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ভুক্তভোগী আহত অন্তঃসত্ত্বার ভাই ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘গত ২৬ জানুয়ারি জাবির অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহত রিকশা চালক ছাড়াও আমার পরিবারের ৪ জন আহত হয়। আমার বোনের গর্ভের বাচ্চা মারা গেছে। আমার বোনসহ আহতদের চিকিৎসা এখনও চলমান। আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা এতই খারাপ যে, আমরা সঠিক চিকিৎসা চালাতে পারছি না। এজন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমার পরিবারের আহতদের চিকিৎসার ব্যয়বাবদ ক্ষতিপূরণের দাবি জানাই।’
দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া আহ্বান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনৌজ কান্তি রায় বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহত রিকশা চালকের ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়াতো দূরের কথা তারা এটাকে মিথ্যা হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা ঘটনার শুরুতে জেনেছি মেডিকেল কর্তৃক তিন দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা। অথচ ঘটনার ১ মাস পেরিয়ে গেলেও তারা নাকি কোন তদন্তই করেনি। আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই, আপনাদের চক্রান্ত সফল হবে না। অনতিবিলম্বে ভুক্তভোগী পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিন, নইলে আমরা জাবি ছাত্রফ্রন্ট তীব্র আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হব।’

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে জাবি ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব বলেন, ‘একটি অ্যাম্বুলেন্স যেখানে রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হওয়ার কথা, সেখানে কিভাবে একটি হলের রিইউনিয়নের জন্য মদ আনতে ব্যবহৃত হয় সেটার জবাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিতে হবে। অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় দু’জন মানুষ নিহত হয়েছেন, অথচ তাদের কাছে এর কোন মূল্যই নেই। আমরা আজকে এখান থেকে বলতে চাই, নিহত রিকশা চালক ও অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের ক্ষতিপূরণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিতে হবে।’
গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাভারের বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মদবহনকারী এক অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় এক অটোরিকশাচালক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ আরও চার যাত্রী গুরুতর আহত হয়। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক রিফাত চৌধুরী ও উপ-অর্থ সম্পাদক আহসান হাবিব ইমন অবস্থান করছিলেন।
ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।