সংঘাত-সংঘর্ষ ও একতরফা নির্বাচনের পথ পরিহার, দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং শ্রমিক হত্যার বিচার, ক্ষতিপূরণ, ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতের দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে প্রতিবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে এ প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে’র সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজ অনুশীলন কেন্দ্র-এর কামাল হোসেন বাদল। এতে বক্তব্য রাখেন প্রগতি লেখক সংঘ-এর রঘু অভিজিৎ রায়, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র-এর মফিজুর রহমান লাল্টু, আব্দুল হামিদ খান ভাষাণী পরিষদের ডা. হারুনুর রশিদ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র-এর জাকির হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংঘাত, সংঘর্ষ শুরু হয়েছে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে একতরফা নির্বাচন কোনভাবেই কাম্য নয়। সাধারণ জনগণ আতঙ্কিত। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করে এই সংকট সমাধান করা সম্ভব বলে মনে করে প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ।
তারা আরো বলেন, শুধু রাজনৈতিক অস্থিরতাই নয়, দেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাতেও দীর্ঘদিন ধরে চলছে শোষণ-নির্যাতন-নৈরাজ্য। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরির দাবিকে নস্যাৎ করতে দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে এরই মধ্যে ৪জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। শ্রমিকের দাবি উপেক্ষা করে সরকার মালিকদের পক্ষের প্রস্তাবিত ১২৫০০ টাকা মজুরি নির্ধারণ করে দিয়েছে যা কোনভাবেই বর্তমান বাস্তবতায় যুক্তিসঙ্গত নয়। শ্রমিক হত্যার বিচার, ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং যুক্তিসঙ্গত ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতের মাধ্যমে পোশাক খাতের অস্থিরতা নিরসন করা সম্ভব।
প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে আবৃত্তি পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য শিখা সেন গুপ্তা, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র-এর কামরুজ্জামান ভূঁইয়া প্রমুখ। এছাড়া, দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। জারি গান পরিবেশন করে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
সবশেষে সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে নির্মিত পথনাটক ‘ঝাঁজ’ পরিবেশন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। নাটকটি রচনা করেছেন প্রবীর সরদার এবং নির্দেশনা দিয়েছেন অমিত রঞ্জন দে। এ নাটকে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অহেতুক বিদেশি হস্তক্ষেপ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ফিলিস্তিনে গণহত্যাসহ বিভিন্ন সাম্প্রতিক বিষয় তুলে আনা হয়। এই পথনাটকের মধ্য দিয়েই শেষ হয় প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ আয়োজিত প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ।