শ্বশুরের জিম্মায় রাখা গরু-মহিষ ফিরে পেতে জামাইয়ের বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়ে অবশেষে মিটলো সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসে।
ঘটনার বিবরণ থেকে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরের রামগতির আব্দুল ওদুদ সৌদি আরব যাওয়ার আগে ৫টি গরু ও ৮টি মহিষ তার শ্বশুরের জিম্মায় রেখে যান। ১১ বছর পর ২০১৮ সালে সৌদি থেকে ফিরে এসে দেখেন ২০টি মহিষ ও ৭টি গরু হয়েছে। পরবর্তীতে ৩টি মহিষ মারা গেলে ১৭ টি মহিষ থাকে। একপর্যায়ে এসব গরু-মহিষ শ্বশুরের কাছে ফেরত চান জামাই আব্দুল ওদুদ। কিন্তু শ্বশুর এসব ফেরত দিতে অস্বীকার করলে বিরোধ দেখা দেয়।
এ নিয়ে গ্রামে কয়েক দফা সালিশ হয়, কিন্তু তাতে কোন সমাধান হয়নি। একপর্যায়ে জামাই আব্দুল ওদুদ লক্ষ্মীপুরের এডিএম কোর্টে শ্বশুর নূর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এডিএম কোর্ট পুলিশকে জামাই-শ্বশুরের বিরোধের বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন। পুলিশ তদন্ত করে গরু-মহিষ জামাইয়ের বলে সত্যতা পেলে আদালত জামাইকে তা বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। তবে এডিএম কোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে শ্বশুর লক্ষ্মীপুর দায়রা আদালতে যান। পরবর্তীতে দায়রা আদালত স্থানীয় একজন কলেজ অধ্যক্ষের মাধ্যমে এ বিষয়ে আরেকটি তদন্তের নির্দেশ দেন। সে তদন্তেও গুরু-মহিষ জামাইয়ের বলে সত্যতা মেলে। ফলে এডিএম কোর্টের আদেশই দায়রা আদালত বহাল রাখেন।
তবে শশুর এখানেই থেমে থাকেননি। দায়রা আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে শ্বশুর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে আসেন। একপর্যায়ে হাইকোর্ট বিরোধের বিষয়টি দেখে আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির পরামর্শ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসে যেতে বলেন। সেই অনুযায়ী গরু-মহিষ নিয়ে জামাই শ্বশুরের বিরোধের বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসে কয়েক ঘণ্টা দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়। যেখানে দুই পক্ষের আইনজীবীদের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসার ফারাহ মামুন ও সমন্বয়কারী রিপন পৌল স্কু উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ আলোচনার পর উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিরোধীয় ১৭টি মহিষের মধ্যে বড় ৫টি ও ছোট ৪টি মহিষ জামাই আব্দুল ওদুদ আর বড় ৬টি ও ছোট ২টি মহিষ নূর মোহাম্মদ নিতে সম্মত হন। আর গরু নিয়ে এরই মধ্যে মিটমাট হয়ে গিয়েছে বলে জানা যায়। সবশেষে জামাই-শ্বশুর উভয়ই লিগ্যাল এইড অফিসে হওয়া সিদ্ধান্ত মেনে হাসি-খুশি হয়ে বাড়ি ফেরেন।