চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের মধ্যে বিশ্ববাজারে বেড়ে যাওয়া জ্বালানির দাম নিয়ে অনেক দেশই নানামুখী সংকটে পড়েছে। বাংলাদেশও সেই সংকটের বাইরে না। যার উত্তাপ টের পাওয়া যাচ্ছে দেশের তেলের বাজারেও। এমন পরিস্থিতিতে বেশি দামে তেল কিনে, অনেকটা কম দামে সেই তেল বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই সরকারকে বাধ্য হয়েই কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। যেসব সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের জন্য কিছুটা হলে সমস্যায় ফেলবে।

সোমবার সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তেল ও বিদ্যুৎ খরচ কমাতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম সারাদেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং, ডিজেল চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আপাতত বন্ধ রাখা, সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পম্প বন্ধ রাখা, অফিস সময় কমিয়ে আনা, এসির ব্যবহার কমানো ইত্যাদি।

এসব সিদ্ধান্তের মূলবার্তা হলো, তেল ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে কৃচ্ছ্রসাধন। আমাদের দেশে বেশির ভাগ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্যাস, কয়লা এবং ফার্নেস অয়েল চালিত হলেও কিছু কেন্দ্র ডিজেল চালিত। এসব কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার ফলে অন্তত দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত কম উৎপাদন হবে। সেই ঘাটতি সমন্বয়ে লোডশেডিং ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প সরকারের কাছে খোলা নেই।

তবে এই লোডশেডিং হবে পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী। এলাকার গুরুত্ব বিবেচনায় আপাতত এক থেকে দুই ঘণ্টা গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিং করা হবে। এতে অনেকেরই অনেক রকম সমস্যা হবে। কিন্তু দেশের সার্বিক স্বার্থে সেই সমস্যাকে স্বীকার করে নিতে হবে। মোটা দাগে বললে, আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। আজকের বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরীও তাই বলেছেন।

এটা ঠিক, এমন পরিস্থিতি সব সময় থাকবে না। হয়তো আগামী কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে এই সংকট। তবে এই কৃচ্ছ্রসাধন শুধু বিদ্যুৎ আর তেলের ক্ষেত্রেই নয়, খাদ্যসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রেও করতে হবে। জাতীয় প্রয়োজনে সবাইকে একতাবদ্ধ হবে। সবাই মিলে করলে যে কোনো কঠিন কাজই সহজ হয়ে যায়।

আমরা মনে করি, এই লোডশেডিংয়ের ক্ষেত্রে যেন বিশেষ কোনো এলাকাকে প্রাধান্য না দেওয়া হয়। মানুষের কাছে তা যেন সহনশীল পর্যায়ে থাকে।