এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
নিজেকে প্রতিনিয়ত তৈরি রাখার কাজটা ঠিকঠাক করে যাচ্ছিলেন ধারে রিয়াল মাদ্রিদে খেলতে আসা জোসেলু রোমেলু। ৩৪ বর্ষী ফরোয়ার্ড জানতেন, হাতে সময় খুব বেশি নেই। হারতে বসা দলকে উদ্ধারে দ্রুতই নিজেকে মেলে ধরার সুযোগটা খুঁজছিলেন। বদলি হিসেবে নেমে বনে গেলেন নায়কই। পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে যেতে থাকা দলের ত্রাণকর্তা হলেন। জোড়া লক্ষ্যভেদে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ২-১ গোলের রোমাঞ্চকর জয়ে রিয়ালকে পাইয়ে দিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের টিকিট।
ম্যাচের তখন ৮১ মিনিট। ফেদেরিকো ভালভার্দের পরিবর্তে জোসেলুকে মাঠে নামান মাস্টারমাইন্ড আনচেলত্তি। সাত মিনিট পর হতাশার চাদর ফেলে জ্বলে ওঠে কামব্যাকের রাজা রিয়াল। বল গোলরক্ষকের হাত ফসকে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাঁ-পায়ের শটে স্পেনিয়ার্ড তারকা সেটি জালে জড়িয়ে সমতা টানেন। যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে রুডিগারের ক্রসে বল নিয়ে জোসেলু জোড়া গোলের দেখা পেলে লস ব্লাঙ্কোসরা আবারো দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের পটভূমি লেখে।
ম্যাচের পর উচ্ছ্বসিত জোসেলু বললেন, ‘নায়ক হওয়ার বিষয়ে জানি না। তবে আমি ভীষণ আনন্দিত। ব্যাপারটা কল্পনা করতে পারেন! এটা অবিশ্বাস্য ও দর্শনীয় ছিল। এই দলটি কখনোই হাল ছাড়ে না। শেষ পর্যন্ত লড়াই তার রক্তে রয়েছে।’
‘সবসময় এ ধরনের পারফরম্যান্সের স্বপ্ন দেখে থাকবেন। প্রথম লক্ষ্য ছিল বুদ্ধিমান হয়ে নিজেকে প্রস্তুত রাখা। বায়ার্নের ফুটবলাররা ক্লান্ত ছিল। যা ঘটেছে তাতে বলা যায়, আমার সেরা স্বপ্নগুলোও আজকের মতো উৎকৃষ্ট নয়।’
সবশেষ ১১ বছরের মধ্যে ষষ্ঠবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে গেল রিয়াল। গত সপ্তাহে লা লিগার শিরোপা জেতা দলটি এবার আরও একবার ইউরোপসেরার মুকুট জয়ের অপেক্ষায়।
জোসেলু ২০১১-১২ মৌসুমে রিয়ালের ডেরায় এসে একটি মাত্র ম্যাচ খেলতে পেরেছিলেন। এরমাঝে অনেকগুলো ক্লাব ঘুরে ২০২৩ সালে এস্পানিওল থেকে ধারে আবারো স্প্যানিশ জায়ান্টদের সঙ্গে যোগ দেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের মতো বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণও করলেন।
ইংল্যান্ডের সাবেক উইঙ্গার ও রিয়ালের হয়ে দুবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী স্টিভ ম্যাকম্যানম্যান ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘কখনোই ভাবেননি যে জোসেলু দুইবার দলকে উদ্ধার করবেন। গোলের সুযোগ নষ্টের জন্য তিনি অতীতে বেশ সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু কে চিন্তা করেছিল যে এমন একমুহূর্ত তিনি তৈরি করবেন। আমরা সন্ধ্যার নায়ক কে হতে চলেছে, তা নিয়ে কথা বলেছিলাম। শেষ পর্যন্ত তিনি হলেন জোসেলু।’
২০০১ সালে বায়ার্নের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী সাবেক ইংলিশ মিডফিল্ডার ওয়েন হারগ্রিভসের ভাষ্য, ‘জোসেলু এই মৌসুমে বেঞ্চের বাইরে রিয়ালের জন্য দুর্দান্ত ছিল। তিনি কোথায় খেলেছেন, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। এটা তার সহজাত প্রবৃত্তি। তার দ্বিতীয় গোলটি রিয়াল মাদ্রিদ দলের সংক্ষিপ্তসার। তারা শেষ মুহূর্তে একটি গোল খুঁজে পায়।’