দিনাজপুর দাইনুর সীমান্তে নিহত মিনহাজ ইসলাম মিনারের (১৭) মরদেহ ৫ দিন পর ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মরদেহ ফেরতের প্রাক্কালে পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের আহাজারিতে আকাশটাও যেনো কাঁদছিলো। মুষলধারে বৃষ্টিতে মরদেহ হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতাও যেনো ভেস্তে যাচ্ছিলো, পরে বৃষ্টি শেষে বিকেল সাড়ে ৫টায় হস্তান্তর করা হয় মরদেহ।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ’র গুলিতে নিহত মিনারের মরদেহ আজ সোমবার ফেরত দেয়ার সময় বিজিবি-বিএসএফ, দু’দেশের পুলিশ, গণমাধ্যম কর্মী, জনপ্রতিনিধি, নিহতের স্বজনসহ প্রায় সবাই ঘন্টাব্যাপী নিরব হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।
সীমান্তের ৩১৪/৭ নম্বর মেইন পিলারের শূন্য রেখায় শনিবার ও আজ সোমবার সকাল এবং বিকেলে বিজিবি-বিএসএফ’র কোম্পানী পর্যায়ে তিন দফা বৈঠক শেষে ৫ দিন পর আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় মরদেহ ফেরত দেয় বিএসএফ।
বিজিবি-বিএসএফ’র উপস্থিতিতে ভারতীয় গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা দিনাজপুর কোতয়ালী থানার পুলিশের মাধ্যমে নিহত মিনহাজ ইসলাম মিনার (১৭) মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় নিহত মিনারের পরিবার ও স্বজনদের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
এ সময় দাইনুর বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার আনিস হোসেন, বিওপির নায়েক সুবেদার আকতার হোসেন, কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম, ৯ নং আস্করপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক, ভারতের হরহরিপুর ভাদরা বিওপি ক্যাম্পের অধিনায়ক এবং বিজিবি-বিএসএফ’র জওয়ান, দু’দেশের পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার রাত সাড়ে ১০ টায় দাইনুর বিওপির ৩১৫ নাম্বার মেইন পিলারের সীমান্তের কাছে ওই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার পর মরদেহ নিয়ে যায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার রাতে টগবগে তরুণ মিনার ৫ বন্ধু’র সাথে ভারতে গিয়েছিলো মাছ ও কচ্ছপের শুটকি আনতে। ভারতে এটাই নাকি ছিলো তার জীবনে প্রথম ও শেষ যাওয়া বলে তার পরিবার দাবি করেছে। সীমান্তবর্তী বাড়ি হলেও মিনার কখনো যায়নি ভারতে। পড়ালেখা আর পরিবারের টুকিটাকি কাজ নিয়েই সময় পার করতো মিনার।
এদিকে নিহত মিনারের মা মিনারা বেগম ৪ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। খানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া তার ছেলে মিনার প্রলোভনে ফেলে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিত ভাবে বিএসএফের গুলিতে হত্যা করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তিনি। এ ঘটনার সাথে তার এক নিকটতম আত্মীয় আছে।
বিষয়টিতে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম জানিয়েছেন।