সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে জয় দিয়ে বিপিএলের দশম আসর শুরু করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দ্বিতীয়টিতে হেরে যায় খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে। তৃতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তানজিদ হাসান তামিমের দুরন্ত ব্যাটিং ও নাজিবউল্লাহ জাদরানের ক্যামিওতে দুর্দান্ত ঢাকাকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে শুভাগত হোমের দল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ঢাকাকে ব্যাটে পাঠান চট্টগ্রাম অধিনায়ক শুভাগত। নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১৩৬ রান সংগ্রহ করে ঢাকা। জবাবে নেমে ১৮.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে চট্টগ্রাম।
সোমবার শীতের প্রকোপে বিপিএল উন্মাদনায় ভাটা পড়ে। প্রথম দুদিনের মতো দর্শকের দেখা মেলেনি। গ্যালারির অধিকাংশ আসনই ছিল ফাঁকা। সময় গড়ানোর সাথে সাথে অবশ্য দর্শকের আনাগোনাও বেড়েছে কিছুটা।
হিমশীতল ঠাণ্ডায় ম্যাচের শুরুটা ছিল চট্টগ্রামের বোলারদের দখলে। দ্বিতীয় ওভারে রক্তাক্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন ঢাকার শ্রীলঙ্কান ওপেনার ধানুস্কা গুনাথিলাকা। চ্যালেঞ্জার্সের বোলার আল-আমিন হোসেনের প্রথম দুটি বল দেখেশুনেই পার করেন গুনাথিলাকা। তৃতীয় বলটি বুঝে উঠতে পারেননি লঙ্কান ব্যাটার। ইনসাইড এজ হয়ে বল আঘাত করে হেলমেটে। পড়ে যান সাথে সাথেই। যদিও পরে উঠে দাঁড়িয়েছেন, তবে ছিলেন না খেলার মতো অবস্থায়। রক্তাক্ত হয়ে মাঠ ছাড়েন। তার কনকাশন সাব হিসেবে ঢাকার একাদশে যুক্ত হয়েছেন লাসিথ ক্রসপুল্লে।
গুনাথিলাকার রিটায়ার্ড হার্টের পর মাঠে এসে সুবিধা করতে পারেননি সাইফ হাসান। ৯ বলে ৯ রান করে আল-আমিনের শিকার হন। ড্রাইভ করতে গিয়ে কভারে নাজিবুল্লাহ জাদরানের তালুবন্দি হন।
পঞ্চম ওভারে দলীয় ১৬ রানে ফিরে যান রানের খাতা খুলতে না পারা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শুভাগত হোমকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে নিহাদুজ্জামানের তালুবন্দি হন ঢাকার অধিনায়ক।
অষ্টম ওভারে জোড়া উইকেট হারায় ঢাকা। নিহাদুজ্জামানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কভার পয়েন্টে তানজিদ হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন নাঈম শেখ। ১১ বলে ৮ রান করেন তিনি। ওভারের পঞ্চম বলে রানআউট হয়ে ফিরে যান অ্যালেক্স রোস। দুই চারে ৯ বলে ১১ রান করেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার।
৩৩ রানে চার ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ঢাকা। পরে ইরফান শুক্কর ও গুনাথিলাকার সাব হিসেবে নামা ক্রসপুল্লের ব্যাটে চাপ কাটিয়ে তোলে ঢাকা। ৪৭ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন দুজনে। ১৫.৪ ওভারে দলীয় ১০৬ রানে ক্রসপুল্লেকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন কার্টিস ক্যাম্ফের। তিনটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩১ বলে ৪৬ রান করে যান তিনি।
১৮তম ওভারে ফিরে যান ইরফানও। ২৬ বলে ২৭ রান করে বিলাল খানের বলে সরাসরি বোল্ড হন। শেষদিকে তাসকিন আহমেদের ৯ বলে ১৫ রানের ইনিংসে কিছুটা লড়াই করার মতো পুঁজি পায় ঢাকা।
চট্টগ্রামের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন আল-আমিন ও বিলাল খান। শুভাগত, নিহাদুজ্জামান ও ক্যাম্ফের একটি করে উইকেট নেন।
জবাবে নেমে চট্টগ্রামকে ঝড়ো শুরু এনে দেন ওপেনার আভিস্কা ফের্নান্দো। ইনিংস লম্বা করতে পারেননি লঙ্কান ব্যাটার। ওভারের শেষ বলে দলীয় ১৯ রানে ফিরে যান শরীফুলের শিকার হয়ে। তিন চারে ৬ বলে ১২ রান করেন ফের্নান্দো।
এরপর ঝড় তোলেন তানজিদ হাসান তামিম। অন্যপ্রান্তে ব্যাটে নামা ইমরানুজ্জামান দাঁড়াতে পারেননি উইকেটে। ২.২ ওভারে দলীয় ২৮ রানে শরীফুলের দ্বিতীয় শিকার হন। করেন ৩ বলে ১ রান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে শাহাদাত হোসেন দীপুকে নিয়ে ৫৩ রানের জুটি গড়েন তানজিদ তামিম। ১১তম ওভারের শেষ বলে দীপু ফিরে যান উসমান কাদিরের শিকার হয়ে। ৩১ বলে ২২ রান করেন দীপু।
১৫.৩ ওভারে ফিফটি পূর্ণ করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন তানজিদ হাসান তামিম। তাসকিন আহমেদের ডেলিভারি উড়িয়ে মেরে ডিপকভার অঞ্চলে অ্যালেক্স রোসের তালুবন্দি হন তামিম। ছয়টি চার ও এক ছক্কায় ৪০ বলে ৪৯ রান করে যান ওপেনার।
পরে শুভাগত হোমকে সঙ্গী করে চট্টগ্রামকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান নাজিবুল্লাহ জাদরান। এক চার ও তিন ছক্কায় ১৯ বলে ৩২ রান করেন জাদরান। শুভাগত করেন ১১ বলে ৭ রান।
ঢাকার হয়ে শরীফুল ইসলাম দুটি উইকেট নেন। তাসকিন ও উসমান কাদির একটি করে উইকেট নেন।