
সিনেমায় অভিনয় করে মানুষের মন জয় সহজ কথা নয়। রাজ্জাক, সালমান শাহ্, মান্না, রিয়াজ পরবর্তী সেই অসাধ্য সাধন করেছেন একমাত্র শাকিব খান। তারকাখ্যাতি দিয়ে পৌঁছেছেন দেশের আনাচে কানাচে। ২৩ বছরের ক্যারিয়ারে প্রায় ১৭ বছর ধরে অপ্রতিদ্বন্দ্বী-অপ্রতিরোধ্য এই নায়ক!
এই তো কদিন আগেও কিংবদন্তী কাজী হায়াতের মতো নির্মাতার কথা, মূল ধরারা সিনেমার চাবি এখনও শাকিবের হাতে! সিনেমায় লম্বা সময় ধরে অনেক নায়ক আসেন, আবার চলে যান; কেউ সেভাবে টিকে থাকতে পারেন না। ঠিক কী কারণে শাকিব খান আজও বহাল তবীয়তে?
সিনেমা সংশ্লিষ্টদের কথা, অবশ্যই শাকিব খান নায়ক হিসেবে বারবার পরীক্ষিত। তার যে পরিমাণে স্টারডম সেটা বিস্ময়কর! অনেক নায়কের ক্যারিয়ারে সংখ্যায় যতগুলো সিনেমা তার চেয়ে শাকিবের হিট সিনেমা বেশি! রুপালী পর্দায় দীর্ঘদিন অনুপস্থিত হলেও ব্যক্তিগত জীবনের খবর দিয়ে তাকে সংবাদ শিরোনামে পাওয়া যায়! ব্যক্তি জীবন নিয়ে সমালোচনায় পড়লেও শাকিব তার কাজ দিয়ে বারবার মানুষের মন জয় করেছেন।
বাংলা সিনেমার এই সুপারস্টারের ৪৪তম জন্মদিন মঙ্গলবার (২৮ মার্চ)। তার ভক্ত অনুসারীরা জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকে শুভেচ্ছায় ভাসাচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ও চলচ্চিত্র বান্ধব ফেসবুক গ্রুপ এবং সমালোচকরাও বার্থডে উইশ জানাচ্ছেন শাকিবকে।

জীবনের ৪৪ বসন্তে কাটিয়ে দেওয়া ঢালিউডের এই ‘সম্রাট’-এর ক্যারিয়ার গ্রাফ বলে দেয়, বিশেষ কিছু কারণে শাকিব খান অনবদ্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বী-অপ্রতিরোধ্য! কেউ কেউ আবার তার বিকল্প তৈরি করতে না পারায় নির্মাতাদের দিকে আঙুল তুলেছেন।
নায়ক মান্নার মৃত্যুর আগেই শাকিবের ক্যারিয়ারে উত্থান। ২০০৭-০৮ সাল নাগাদ দু’বছরে ২৯টি সিনেমা মুক্তি পায় তার। তখনই শাকিবের ক্যারিয়ারে মাইলফলক ১৫ কোটির ব্যবসা করা ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’, মুক্তির পর গোটা সিনেমার চেহারাই বদলে যায়।
পরে ২০০৯ সালে দুই ঈদে ৮টি সিনেমা মুক্তি পায়। প্রায় প্রতিটি সিনেমা সুপারহিট হয়, এমন রেকর্ড আজও বাংলা সিনেমায় বিরল! শাকিবকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর মেগাহিট দিয়ে তিনি পৌঁছান খ্যাতির শীর্ষে। সাফল্য আর শাকিব এই দুটি বিষয় হয়ে ওঠে পরিপূরক।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের কথা, তখন থেকে চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে শাকিবময়। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে প্রচুর পরিশ্রম করে তিনি হয়ে ওঠেন নির্ভরতার প্রতীক।
বাংলাদেশ নয়, শাকিব খান তার জাত চিনিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গেও। যৌথ প্রযোজনার সিনেমাগুলো দিয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি হাইপ তুলেছেন দু’বাংলায়। তার শিকারী, নবাব ছবিগুলো দেখতে হলে হলে ঢল নামে। সিনেমা কম নির্মিত হওয়ায় চালু হওয়া সিঙ্গেল স্ক্রিনগুলো সচল থাকে তার সিনেমা দিয়ে।
২৪৩টির মতো সিনেমার এই নায়কের সিনেমা মুক্তির আগে বুকিংয়ে অগ্রিম কাটতি! ভক্তরাও তার সিনেমার জন্য মুখিয়ে থাকেন। অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন শাকিব খান। পাশাপাশি দেশ বিদেশের বহু সম্মাননা তার ঝুলিতে।
একাধিকবার দেশসেরা করদাতা হয়েছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী সিনেমার এই নায়ক। এর বাইরে প্রযোজক হিসেবেও নাম কামিয়েছেন শাকিব। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম এসকে ফিল্মস। যেখানে ‘হিরো দ্য সুপারস্টার’ ও ‘পাসওয়ার্ড’ এর মতো ব্লকবাস্টার সিনেমা নির্মাণ করেন।
বিজ্ঞাপন ও ইউটিউবেও শাকিবের দাপট কম নয়। তার সিনেমা ও গানে কোটি ভিউস যেন মামুলি ব্যাপার!