২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের পপসংগীত জগতের কিংবদন্তী আজম খানের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ তার ৭৪ তম জন্মদিন হত। তার মাধ্যমেই উন্মোচিত হয়েছিল বাংলা পপসংগীতের এক অন্যধারা।
বাংলা পপ ও রক সংগীতের শুরু ‘গুরু’ আজম খানের হাত ধরে। সত্যি সত্যি ‘গুরু’ হওয়ার যে গুণ ও প্রজ্ঞার দরকার তার সবটুকুই এই সংগীত অন্তপ্রাণ মানুষটি ধারণ করতেন। গুরু মানে যিনি অন্ধকার থেকে আলোর পথে চালিত করেন, যিনি আলোর পথ দেখান। বাংলা ব্যান্ডের জগতে শুধু নয়, আজম খানকে বাংলা সংগীত জগতেরই একজন ‘গুরু’ বললে অত্যুক্তি হয় না।
১৯৫০ সালের এই দিনে ঢাকার আজিমপুরে আজম খানের জন্ম হয়। পপ সম্রাট আজম খানের কর্মজীবন শুরু হয় গত শতকের ষাটের দশকের গোড়ার দিকে। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় সংঘটিত কয়েকটি গেরিলা অভিযানে তিনি অংশ নেন। ১৯৭২ সালে তার ব্যান্ড উচ্চারণ এবং আখন্দ (লাকী আখন্দ ও হ্যাপী আখন্দ) দেশব্যাপী সংগীতের জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
আজম খানের গাওয়া অসংখ্য গান আজও বাঙালির হৃদয়ে ঢেউ তুলে। বাংলাদেশের বাইরেও রকস্টার হিসেবে তার নাম উচ্চারিত হয়। তার গাওয়া বেশ কিছু গান সত্তর এবং আশির দশকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ওরে সালেকা- ওরে মালেকা, আলাল ও দুলাল, অনামিকা, অভিমানি, আসি আসি বলে ইত্যাদি গানগুলো এখনো মানুষের মনে জীবন্ত। ‘আমি বাংলাদেশের আজম খান, বাংলাতে গাই পপ গান…’ এই গানটির মধ্য দিয়ে আজম খানের জীবনের কিছু অংশ চমৎকারভাবে উঠে এসেছে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি নিজেই গানটি লিখেছিলেন।
২০১১ সালের ৫ জুন দুরারোগ্য ক্যানসারে ভোগে আজম খান মারা যান। কিন্তু তিনি ভক্তদের হৃদয়ে বেঁচে আছেন তাঁর চিরস্মরণীয় গানগুলোর জন্য।