সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনাসহ যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি প্রতিরোধে যৌথ টহল বাড়াবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)।
শনিবার ৯ মার্চ বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫ দিনের ৫৪তম সীমান্ত সম্মেলন শেষে যৌথ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
দুই দেশের মহাপরিচালক বলেন, সীমান্ত হত্যা কোনো টার্গেট কিলিং নয়, তবে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সম্মেলনে মাদক, চোরাচালান, মানবপাচার রোধ, সন্ত্রাস এবং অবৈধ অনুপ্রবেশসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা হয়।
যৌথ আলোচনার দলিল’ সই করার মধ্য দিয়ে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের পাঁচ দিনের সীমান্ত সম্মেলন শনিবার শেষ হয়েছে। বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী নিতিন আগ্রাওয়ালের নেতৃত্বে ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ৯ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে।
অপরদিকে, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও যৌথ নদী কমিশনের প্রতিনিধিসহ ১৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী ৫ হাজার হেক্টর চাষযোগ্য ফসলি জমির সেচ সুবিধা ও সীমান্তবর্তী জনগণের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে মানবিক দিক বিবেচনায় অবিলম্বে কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে বন্ধ থাকা রহিমপুর খালের মুখ পুনরায় খুলে দেয়ার জন্য বিএসএফ মহাপরিচালক নিতিন আগ্রাওয়ালের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিএসএফ মহাপরিচালক উভয় পক্ষের স্বার্থ বিবেচনায় দ্রুত রহিমপুর খালের মুখ পুনরায় উন্মুক্তকরণের আশ্বাস দেন।
উভয় পক্ষ বিদ্যমান পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট রাখা ও পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির জন্য ‘সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’র আওতায় নোডাল অফিসার পর্যায়ে ত্রৈমাসিক বৈঠক, সমন্বিত টহল, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, জয়েন্ট রিট্রিট সিরিমনি, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিনিময়, স্কুলগামী শিশু এবং উভয় দেশের সাংবাদিকদের পারস্পরিক শুভেচ্ছা সফর ইত্যাদি দ্বিপাক্ষিক কার্যক্রম বিষয়ে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে সম্মত হয়েছে।
সম্মেলনের ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করেন উভয় মহাপরিচালক। তারা উভয়েই সীমান্তে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। গত জানুয়ারি মাসে বিএসএফ এর গুলিতে বিজিবির সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন বিএসএফ মহাপরিচালক নিতিন আগ্রাওয়াল।