কলকাতার ছবি দিয়ে অভিষেক, ফারিণের মুখে দারুণ অভিজ্ঞতার গল্প
‘পাঠান’ এর জয়জয়কারের মধ্যেই কলকাতায় মুক্তি পেলো ফারিণ অভিনীত ‘আরও এক পৃথিবী’
ভারতজুড়ে শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ ঝড় অব্যাহত। মুক্তির এক সপ্তাহ পার হলেও দেদারসে চলছে ‘পাঠান’। পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে ‘পাঠান’ প্রদর্শনের মধ্যেই মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণের প্রথম ভারতীয় বাংলা ছবি ‘আরও এক পৃথিবী’।
এসকে মুভিজের প্রযোজনায় অতনু ঘোষের পরিচালনায় এ ছবির মুক্তি উপলক্ষে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন ফারিণ। এমনকি তার পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। প্রথম ছবি মুক্তির আগে প্রচারণায় এই ছুটোছুটি দারুণভাবে উপভোগ করছেন ফারিণ।
কলকাতা থেকে চ্যানেল আই অনলাইনকে তাসনিয়া ফারিণ বলেন, আমি খুবই হ্যাপি, প্রথমে এতো ভালো একটি ছবি করতে পেরেছি। তবে একটি ছবি করে এখানকার ইন্ডাস্ট্রির সার্বিক অবস্থা জাজ করা যাবে না। কিন্তু আমি দেখছি প্রডাকশন হাউজ, ডিরেক্টর টিম প্রত্যেকে আমাকে খুব আন্তরিকভাবে সাপোর্ট করছেন। ছবিটিকে যতভাবে পারা যায় চেষ্টা করছি প্রমোট করার।
‘আরও এক পৃথিবী’র প্রচারণায় অংশ নেয়ায় নতুন নতুন দর্শকদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন নিশ্চয়ই? ফারিণের উত্তর, নতুন পুরাতন অডিয়ান্স বিভক্ত করতে চাই না। তবে আমাদের কাজগুলো এখানে অনেক দর্শক দেখে। বিশেষ করে মিডিয়াতে ইন্টারভিউ দিতে গেলে বুঝতে পারি আমারসহ ঢাকার অনেকের নাটক ওটিটির কাজ তারা নিয়মিত মনোযোগ দিয়ে দেখেন। এতে করে একেবারে নতুন করে এখানে নিজেকে পরিচিত করা হচ্ছে না। ‘আরও এক পৃথিবী’র মাধ্যমে নতুন মাত্রা যোগ হলো।

শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ প্রদর্শনে গেল সপ্তাহে কলকাতা বাংলা ছবিতে বেশ প্রভাব ফেলেছে। বাংলা ছবি হল পাচ্ছে না এমনটাও জানা গেছে। ‘আরও এক পৃথিবী’ ছবিতেও কী সেই প্রভাব পড়েছে?
প্রতিযোগিতা অনুভব করছেন কিনা জানতে চাইলে ফারিণ বলেন, প্রভাব তো একটু হলেও পড়েছে। তবে আমি মনে করি আমার ছবিটা দর্শক ভালোভাবে গ্রহণ করলে শো বাড়বে। আমি চাইবো যারাই আমার ছবি দেখবে মাউথ পাবলিসিটি করবে। এর ফলে পরবর্তীতে আরও ভালো স্থানে যাবে।
পশ্চিমবঙ্গে ৫০টির কাছাকাছি সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে ‘আরও এক পৃথিবী’। ঢাকায় মুক্তির সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে ফারিণ বলেন, একক ভারতীয় ছবি বাংলাদেশে মুক্তির ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা আছে। ঢাকায় মুক্তি পাবে কিনা আমার জানা নেই। হয়তো ওটিটি বা টিভিতে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ারে দেখা যাবে। তবে আমেরিকা, যুক্তরাজ্যে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পাবে এটা সিওর।
লন্ডনে চার প্রবাসী বাঙালির গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘আরও এক পৃথিবী’। ফারিণ ছাড়াও অভিনয় করেন অনিন্দিতা বসু, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় ও সাহেব ভট্টাচার্য।

কলকাতার ছবিতে সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ওয়েব সিরিজ ‘লেডিস এন্ড জেনটেলম্যান’ এর সময়ে পরিচালক অতনু দা ‘আরো এক পৃথিবী’ ছবির চিত্রনাট্য লিখছিলেন । যেহেতু উনি ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টলম্যান’ ওয়েব সিরিজ দেখেছেন তখন ওঁনার মনে হয়েছে প্রতীক্ষার চরিত্রের জন্য আমাকে নির্বাচন করা যেতে পারে। এরপরে উনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এই ছবিতে নিজের চরিত্র সম্পর্কে ফারিণ বলেন, ‘প্রতীক্ষা চরিত্রে অভিনয় করেছি যার চরিত্রে অনেক স্তর আছে। খুবই অন্তরমুখি স্বভাবের মেয়ে প্রতীক্ষা। অল্প বয়স থেকেই সে পরিণত। কারণ ছেলেবেলা থেকেই সে দেখেছে বাবা-মায়ের মধ্যে বনিবনা নেই। পরবর্তীকালে তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। বাবাকে ছেড়ে মায়ের সঙ্গে একটা সময় তাকে থাকতে হয়। ফলে ছেলেবেলা থেকেই ওর মনের মধ্যে একটা ক্ষোভ, যন্ত্রণা রয়েছে। একটা স্বপ্ন নিয়ে সে বেড়ে ওঠে। যখন স্বপ্নপূরণের সুযোগ তৈরির দোরগোড়ায় পৌঁছায় সেই জায়গার থেকে ওর লন্ডন যাওয়া। স্বপ্নভঙ্গের একটা ভয় তার মধ্যে কাজ করে। সেই স্বপ্নকে কীভাবে সাহসের সঙ্গে মনের মধ্যে ও বাঁচিয়ে নিয়ে চলে এবং বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলা করে ছবিতে সেটা দেখার।’

‘আরও এক পৃথিবী’ ছবির প্রযোজক অশোক ধানুকা মুঠোফোনে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, পশ্চিমবঙ্গের ৫০টির মতো হলে মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। এই ছবির টার্গেট অডিয়ান্স আপারক্লাস (কলকাতার)। ইনটেলেচুয়্যাল দর্শকদের জন্যই এই ছবি। কলকাতার বাইরে বেছে বেছে হলে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
অশোক ধানুকা আরও বলেন, ‘পাঠান’ চলার ফলে তেমন কোনো প্রভাব পড়ছে না। ‘পাঠান’ মুক্তির একসপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। প্রথম সপ্তাহে হিন্দি ছবির ২০টি শো থাকলেও দ্বিতীয় সপ্তাহে অর্ধেক হয়ে যায়।
ফারিণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে খুবই ভালো আর্টিস্ট। কাজে প্রচারণায় ভীষণ আন্তরিক। সে দারুণ ভালো করেছে। কলকাতায় এই ছবিতে তার ডেবিউ হলো। আমি মনে করি, ফারিণ বহুদূর যাবে।