বাংলাদেশ অনেক আগেই বিভক্ত হয়েছে। সেই বিভক্তিটা ছিল অর্থ সম্পদের। শোষক আর শোষিতের। যেমনটা বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারপর বাংলাদেশ আবারো বিভক্ত হয়েছে। আরো বিভক্ত হওয়া বাংলাদেশের এবারের বিভক্তিটা এসেছে রাজনীতিকে কেন্দ্র করে। সেই বিভক্তি ছিল গণতন্ত্র আর স্বৈরশাসনের।
এরপর নূর হোসেনের রক্ত আর বহু মানুষের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আপাতদৃষ্টিতে ঐক্যবদ্ধ হলো- কেন্দ্রে ছিল গণতন্ত্র।
এরপর বাংলাদেশ আবারো বিভক্ত হলো। এবারের বিভক্তি বাংলাদেশের ভাগ্যে বিপর্যয়ের সূচনা করল। কারণ এই বিভক্তি হলো গণতন্ত্রের বিভক্তি। এই বিভক্তির ভিত্ রচনা করল ক্ষমতার লোভ। ক্ষমতার লোভ যেন অবিনশ্বর হয়ে উঠল বাংলার আকাশে। দানব আকৃতি ধারণ করল সেই লোভ। দেশ সুস্পষ্টভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ল। শুরুটা ৯২/৯৩ তে। যার ধারাবাহিকতা চলছেই। বিভক্তির রাজনীতির দুই যুগ পার হয়েছে।
প্রশ্ন হলো এরপর কী? আবারো কি দেশ ও দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে? হতে পারবে? কীসের ভিত্তিতে হবে সেই ঐক্যবদ্ধতা।
আসুন সবাই মিলে ভাবি।
বাংলাদেশের মানুষ উদ্ভাবনে বিশ্ব সেরা না হলেও, কম যায় না। রাজনৈতিক উদ্ভাবনে বাংলাদেশের সুনাম ও দুর্নাম দুটোই রয়েছে। এই দেশের রাজনীতিতে যেমন লগি বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ খুন করার ইতিহাস রয়েছে; বাস পোড়ানোর ইতিহাস রয়েছে; তেমনি ভাষার জন্য রক্ত দেওয়া কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির সূচনা করার ইতিহাস রয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষ একটি প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যার যা কিছু আছে তা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছিল ১৯৭১ সালে। এমন সাহসী ও আবেগসমৃদ্ধ জাতি পৃথিবীতে কয়টা আছে।
আসুন, আমরা আবারো দেশের জন্য আবেগ তৈরি করি। দেশ ও দেশের মানুষের মধ্যেকার বিভক্তিকে কমিয়ে আনি। ঐক্যবদ্ধ হই অন্তত আরেকবার।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)