রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই মিয়ানমার গোয়ার্তুমি করে আসছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানোর পর থেকেই বাংলাদেশের দিকে নিধনযজ্ঞের শিকার মানুষের ঢল নামে। বিশ্বনেতাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত একজনকেও প্রত্যাবাসন করেনি মিয়ানমার।
তবে এতকিছুর পরও মিয়ানমার এখন বাংলাদেশের সাথে বিরোধে জড়াতে চাইছে। এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ভেতর মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে। এতে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এর আগে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে মিয়ানমার সীমান্তে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ঘুমধুমের বাইশফাঁড়ি সীমান্তে এ বিস্ফোরণ হয়।
রোহিঙ্গা সংকটের শুরুর দিকেও মিয়ানমার বেশ কয়েকবার সীমান্তে উস্কানি দিয়েছে। বাংলাদেশ ধৈর্য্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। এখন আবার তারা বাংলাদেশের ভেতরে মর্টার শেল এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছুড়ছে বলেও চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদনে জানা গেছে। এই পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী চরম ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে।
আমরা মনে করি, রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই মিয়ানমারের বর্বরতা ও উগ্রবাদের বিপরীতে বাংলাদেশ মানবিকতা দেখিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সংকট মোকাবেলা করার চেষ্টা করছে। এরপরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বদলে নতুন করে এসব উস্কানি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মিয়ানমারকে এখনই থামাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর অবস্থান গ্রহণ করা উচিৎ।

শুরু থেকেই আমরা বলে আসছি, রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধানও মিয়ানমারকেই করতে হবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শিথিলতার কারণে মিয়ানমারের দুঃসাহস ক্রমে বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মর্টার শেল নিক্ষেপ, সীমান্তে ল্যান্ড মাইন পুঁতে রাখা এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা কোনভাবেই প্রতিবেশিসূলভ আচরণ নয়। বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপনসহ মিয়ানমারকে কূটনৈতিকভাবে শক্ত জবাব দেওয়া এবং সীমান্তের স্থানীয় জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।