টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের উপর ঝড় তুলে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা চালাতে থাকে তাণ্ডব। বোর্ডে দুই শতাধিক রান তুলে ফেলে। তবে ট্রান্স-তাসমান লড়াইয়ে অজিরা হাল ছাড়তে ছিল নারাজ। ব্যাটে পাল্টা জবাব দিয়ে শেষ বলে চার হাঁকিয়ে ৬ উইকেটের নাটকীয় জয় তুলেছে সফরকারী দলটি।
ওয়েলিংটনে তিন ম্যাচ টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে আগে ব্যাট করা স্বাগতিকরা তোলে ৩ উইকেটে ২১৫ রান। শেষ বলে ক্যাঙ্গারুদের দরকার ছিল ৪ রান। টিম ডেভিড বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর খেলার ইতি টানেন।
নিউজিল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ে। ষষ্ঠ ওভারে ভাঙে ৬১ রানের উদ্বোধনী জুটি। মিচেল স্টার্কের বলে মিড উইকেটে ডেভিড ওয়ার্নারের তালুবন্দি হন ১৭ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩২ রান করা অ্যালেন।
দ্বিতীয় উইকেটে বাইশ গজে আগ্রাসী হয়ে ১১৩ রান যোগ করেন রাচীন রবীন্দ্র ও কনওয়ে। ফিফটি হাঁকানো রাচীন খেলেন ৩৫ বলে ২ চার ও ৬ ছক্কায় ৬৮ রানের মারকাটারি ইনিংস। প্যাট কামিন্সের বলে ডিপ মিডউইকেটে স্টার্কের ক্যাচে পরিণত হয়ে কিউই অলরাউন্ডার মাঠ ছাড়েন। খানিকপর আউট হন কনওয়ে। মিচেল মার্শের শিকার হওয়ার আগে ৪৬ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৬৩ রান করেন।
শেষদিকে ব্ল্যাক ক্যাপসদের স্কোর দুইশ ছাড়িয়ে যাওয়ার কাজটা সারেন গ্লেন ফিলিপস ও মার্ক চ্যাপম্যান। চতুর্থ উইকেটে গড়েন ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। ফিলিপস ১০ বলে ১৯ ও চ্যাপম্যান ১৩ বলে ১৮ রানের অপরাজিত থাকেন।
২১৬ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় অজিরা ছিল সাবলীল। দলীয় ২৯ রানে হারায় প্রথম উইকেট। ১৫ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ২৪ রানে অ্যাডাম মিলনের শিকার হন ট্রাভিস হেড। আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ২০ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে মিচেল স্যান্টনারের বলে লংঅনে ফিলিপসের হাতে ধরা পড়েন।
ক্রিজে নেমেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ১১ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৫ রানে লোকি ফার্গুসনের বলে বোল্ড হন। অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ৫৭ বলে ১০৫ রান।
জশ ইংলিশকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ৬১ রান যোগ করে অজিদের কক্ষপথে রাখেন মিচেল মার্শ। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ইংলিশ ২০ বলে ২০ রানে স্যান্টনারের বলে সাজঘরে ফেরেন।
অজিদের শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ৩৫ রান। মিলনের করা ১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে চার এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমান টিম ডেভিড। তাতে শেষ ওভারে সফরকারীদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৬ রান।
উত্তেজনাপূর্ণ শেষ ওভারে টিম সাউদি প্রথম তিন বলে চার রানের বেশি দেননি। চতুর্থ বলে ডেভিড ছক্কা মেরে দেন। পঞ্চম বলে দৌড়ে নেন দুই রান। তাতে শেষ বলে ক্যাঙ্গারুদের দরকার ছিল ৪ রান। ডিপ মিডউইকেট ও ওয়াইড লংঅনের মাঝ দিয়ে ব্যাট চালান ডেভিড। ঝাঁপিয়ে বল ধরার চেষ্টা করা ফিলিপসের তালুর নিচ দিয়ে বল সীমানা ছাড়া হওয়া মাত্র জয়ের উদযাপনে মাতে অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচসেরা মার্শ ৪৪ বলে ২ চার ও ৭ ছক্কায় ৭২ ও ডেভিড ১০ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন।