চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

অঙ্কুরেই প্রতিভা বিনাশের শঙ্কায় আফতাব, বড় বিনিয়োগের পরামর্শ

একসময়ের মারকুটে ব্যাটার আফতাব আহমেদ এখন পুরোদস্তুর কোচ। পেশার টানে পরিবার নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন মার্কিন মুলুকে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাদেশিক দল আটলান্টা ফায়ার-এর হেড কোচ তিনি। টাইগার ক্রিকেটের কিছু সংকট নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন সাবেক তারকা ক্রিকেটার। উত্তরণের জন্য জুনিয়র পর্যায়ে বড় বিনিয়োগের পরামর্শ তার। চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে আসন্ন বিশ্বকাপ, তামিম ইকবালের অবসর-কাণ্ড, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ছেঁটে ফেলার পর আবার ফেরানো প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেছেন আফতাব।

প্রশ্ন: আমেরিকার মতো জায়গায় কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা বলুন প্রথমে।

আফতাব: প্রায় ৬ মাস হয়ে গেছে আমার এখানে আসা। অলরেডি তিনটা টুর্নামেন্ট করে ফেলেছি। মাইনর লিগ হচ্ছে, আটলান্টা টি-টেন এ জয়েন করেছে, ওখানেও ছিলাম। তো মোটামুটি টাচে আছি। এখানে একটা একাডেমিতেও আছি। ২ বছরের চুক্তি। এরপর দেখা যাক…

প্রশ্ন: বাংলাদেশের তুলনায় একদমই ভিন্ন পরিবেশে আছেন। কতটা উপভোগ করছেন?

আফতাব: আলহামদুলিল্লাহ, সব মিলিয়ে আমার ভালো লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বাচ্চারা খুব উপভোগ করছে এখানে। আমাদের লাইফ তো প্রায় শেষের দিকে। এখন সবকিছু ওদের ঘিরে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার যেটা এখানকার ক্রিকেট অনেক উন্নতি করছে। যে টুর্নামেন্টগুলো হয় এখানে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়রা আসে। সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড় তো প্রচুর। বড় বড় খেলোয়াড়রা খেলে যায়। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট হয় অনেক বেশি।

পরবর্তী ৫ বছরে ওরা খুব ভালো জায়গায় পৌঁছে যেতে পারবে। ঘরোয়া কাঠামো বেশ টেকসই। এখানকার মাঠগুলো এত সুন্দর- এক কথায় অবিশ্বাস্য। ছয়-সাতটা গ্রাউন্ড মিলে একটা এরিয়া। আটলান্টার মধ্যেই একটা জায়গায় চারটা কমপ্লেক্স। একটা জায়গায় ছয়-সাতটা মাঠ একসাথে। আরেকটা জায়গায় পাঁচটা মাঠ একসাথে। কেবল আটলান্টায় যদি এই অবস্থা হয়, পুরো ইউএসএ-তে চিন্তা করেন তাহলে কী অবস্থা। আমার মনে হয় এদের পরিকল্পনা অনেক উচ্চ পর্যায়ের। এরা খুব আগাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে কোচিংয়ের কাজটা বেশ উপভোগ করছেন আফতাব

প্রশ্ন: কোচ হিসেবে শেখার জায়গা বা নিজেকে আরও পরিণত করার কতটা সুযোগ আছে?

আফতাব: বাংলাদেশে অনেক দিন কোচিং করিয়ে এখানে কাজ করেছি। বাংলা টাইগার্সে কাজ করেছি। দেশের ক্লাব ক্রিকেটে তো ছিলামই। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করেছি। তারপর আমেরিকায় আসছি। বিভিন্ন জায়গার খেলোয়াড় এখানে।

ভারতের, পাকিস্তান, আফ্রিকার প্রচুর খেলোয়াড় আমেরিকাতে। বলতে গেলে পুরো বিশ্বের খেলোয়াড়ই আছে এখানে। তাদের কালচার সম্পর্কে জানা বড় একটা অভিজ্ঞতা। যেহেতু বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সন্নিবেশ ঘটছে। তো এটা একটা ভালো অভিজ্ঞতার জায়গা আমার জন্য।

প্রশ্ন: কোচিং নিয়ে ভবিষ্যৎ লক্ষ্য কী আপনার?

আফতাব: যেখানেই কাজ করি সবারই স্বপ্ন থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার। আমারও সে ইচ্ছা আছে। ইউএস ক্রিকেট এখন শুধু ডেভেলপ হচ্ছে, বাংলাদেশ দল যেমন ছিল ২০০০ সালের দিকে। ২০২৩ এ গিয়ে কিন্তু বাংলাদেশ অনেক ভালো জায়গায় আছে। ইউএসএ ওই জায়গাটায় আছে এখন। তবে আমার মনে হয় যে ওরা যেভাবে পরিকল্পনা করছে, তাতে হয়তো অত বছর লাগবে না উন্নতি করতে। তাড়াতাড়িই করবে। কারণ জানেন যে এটা শক্তিশালী অর্থনীতির একটি দেশ। তাই উন্নতির সুযোগ অনেক বেশি। মেজর লিগ হয়েছে এখানে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, কেকেআর ছিল। এখানে খুব ভালো ক্রিকেট হচ্ছে।

আমার স্বপ্ন, অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে বাংলাদেশের জাতীয় দলে কাজ করার। এই স্বপ্নটা আজীবন থাকবে। অবশ্যই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ওই স্বপ্নের পথে এগিয়ে যাব।

প্রশ্ন: বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটে নাটকীয় কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। তামিম ইকবালের বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?

আফতাব: যেভাবে রদবদলগুলো হলো আমার মনে হয় বিশ্বকাপের খুব ক্লোজ একটা সময়ে এটা সঠিক না। নিঃসন্দেহে আমিও চাই রদবদল হোক। কিন্তু সেটি চার বছর আগে থেকে হতে হবে। চার বছরের পরিকল্পনায় যারা থাকবে, তাদের কন্টিনিউ করে এগিয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল। ফলাফল খারাপ হোক ভালো হোক, সেটি ম্যাটার করে না।

৩০ জনের একটা স্কোয়াড থাকবে। যে ৩০ জনের ভবিষ্যৎ খুবই ভালো মনে করবে থিংক ট্যাঙ্ক, ওই খেলোয়াড়দের নিয়ে চারটা বছর ধারাবাহিকভাবে কষ্ট করবে। বিশ্বকাপ এমন একটা আসর, যেখানে সবাই চায় ভালো করতে এবং সবারই স্বপ্ন, বিশ্বকাপ তার দেশে আসবে। যেহেতু আমাদের বিশ্বকাপের সময় এতই কম, মনে হয় না এই রদবদলটা ঠিক হয়েছে। সবসময় বলতাম আমাদের ওয়ানডে টিম ভালো। আমার মনে হয় সিনিয়র খেলোয়াড়দের নিয়ে অর্থাৎ ফুল টিম নিয়ে খেলা উচিৎ।

অভিজ্ঞতার ব্যাপার এখানে রয়েছে। অন্তত সিনিয়র খেলোয়াড়দের তাদের শেষ বিশ্বকাপটায় সুযোগ দেয়া উচিৎ। হাথুরুসিংহের ওপর খুব চাপ থাকবে। বিশ্বকাপের খুব কাছে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছে। এই চিন্তাটা আরও আগে থেকে করা উচিৎ ছিল।

আফতাব ছিলেন ভয়ডরহীন ক্রিকেটার

প্রশ্ন: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেয়া হয়েছিল। যদি দীর্ঘ বিরতির পর নিউজিল্যান্ড সিরিজে আবার ডাকা হয়েছে।

আফতাব: আমি যদি বিশ্বকাপের এত সন্নিকটে থাকি, আমি যদি কোচ হই, আমি কখনোই এতটুকু রদবদল করতাম না। চার বছর আগে হলে নিঃসন্দেহে চেষ্টা করতাম। তরুণ খেলোয়াড় ঢুকিয়ে কী করা যায়, না করা যায়। সেটি ভিন্ন ব্যাপার। এই বিশ্বকাপটা যেহেতু খুব কাছে, তো যতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, তাদের সবাইকে নিয়ে মাঠে নামা উচিৎ। পুরো শক্তি নিয়ে মাঠে নামা উচিৎ। এই বিশ্বকাপের পর মনে হয় না অনেকেই থাকবে। তাদেরকে আত্মবিশ্বাস দেয়া উচিৎ ছিল।

যদি আপনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বিশ্বকাপে নেন কিংবা তামিম ফেরে। আমি জানি না তারা কতটুকু আত্মবিশ্বাসী থাকবেন। কারণ তারা জানে যে কোচ তাদের চাচ্ছে বা চাচ্ছে না। এরকম একটা সংশয় তাদের মস্তিষ্কে ঢুকে গেছে। সংশয় নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা খুব কঠিন। এরপরও আমি বলব, বিশ্বকাপে সবাইকে নিয়েই আগানো উচিৎ।

নিঃসন্দেহে আমি হাথুরুসিংহের সঙ্গে একমত যে নতুনদের দেখতে হবে। কেননা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও বেশিদিন ক্রিকেট খেলবে না। মুশফিকুর রহিমও খেলবে না। নতুন খেলোয়াড়দের দেখতে হবে এবং দেখা উচিৎ। বিশ্বকাপের পর এক বছর হয়তো মাহমুদউল্লাহ-মুশফিককে পাব। ২ বছর পর কিন্তু তাদের পাওয়া সম্ভব না। বয়সের একটা ব্যাপার আছে। ইমোশনালি চিন্তা করে লাভ নেই। প্রফেশনালি যদি চিন্তা করেন, তাদের জায়গায় খেলোয়াড় নেয়ার মতো সময় চলে আসছে। সেটি বিশ্বকাপের পরে। পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য দলটা তৈরি করার আগমুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

প্রশ্ন: ওপেনিং নিয়ে বাংলাদেশ দলে দুর্দশা চলছেই। লিটন দাস ছাড়া গত দশ বছরে কেউ সামর্থ্যের জানান দিতে পারেনি। তামিম ইকবাল এখনও অপরিহার্য। ব্যাটিংয়ে সাত নম্বরের সমাধানও মিলছে না।

আফতাব: একটা বিষয় চিন্তা করেন আমরা সবসময় বলি মাহমুদউল্লাহ নাই বা তামিম নাই। মাঝেমধ্যে নাঈম শেখ খেলছে। আমরা অনেকটা জোর করছি। নাঈমকে নিয়ে ট্রল করছি। মানলাম যে নাঈম শেখ চলে না, খেলল না। তার জায়গায় কে খেলবে? কয়টা খেলোয়াড় আছে। বিজয় আছে, সৌম্য আছে। ২০১০ সালে আমি অবসর নিয়েছি। এর কয়েকবছর বছর পরই তারা জাতীয় দলে আসছে। এখন ২০২৩। ননস্টপ কয়েকজন খেলোয়াড়কেই দেখছি দশ বছর ধরে। চিন্তা করেন তো এর বাইরে কেউ আসছে? আমার তো মনে হয় না।

প্রশ্ন: তানজিদ হাসান তামিম এসেছে। যদিও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।

আফতাব: সে প্রতিভাবান নিঃসন্দেহে। কিন্তু কোথাও রান করে আসেনি। হঠাৎ করে নিয়ে আসা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেক কঠিন। পরিচর্যা না করে কোনো কিছু না করে তাকে খেলাবেন। আমার কথা হচ্ছে, শেষ ১০ বছর ধরে কেন একই খেলোয়াড়দের দেখব।

জুনিয়র যে নির্বাচকরা আছেন, জুনিয়র টিম যারা চালাচ্ছেন, তাদের কেন প্রশ্ন করা হয় না যে দশ বছর ধরে একই ওপেনারদের কেন দেখব। আমরা সবসময় নান্নু ভাই, বাশার ভাই, রাজ্জাক এদের কাছে প্রশ্ন করছি। এদের নিচে যারা আছে, তারা কেন প্রমোট করতে পারছে না। তাদের কেন প্রশ্ন করছি না। নাঈম শেখকে আজ বকা দিচ্ছি। তার জায়গায় যে খেলবে, তারও একই স্ট্রাইক রেট হবে যদি নিচে থেকে কাউকে তৈরি করে আনতে না পারেন।

প্রশ্ন: কী করলে সমাধান মিলবে?

আফতাব: জুনিয়র ক্রিকেটে যদি নজর দেন, অনেক ট্যালেন্ট ঝরে যাচ্ছে। কেননা আপনি ট্যালেন্ট খুঁজে আনতে পারছেন না। আমরা জেলা পর্যায়ে খেলেছি, দ্বিতীয় বিভাগ, তারপর প্রিমিয়ারে খেলছি। ওখানে নিজেকে প্রমাণ দিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে এসেছি। আমার মতো আফতাব আহমেদ বা সাকিব আল হাসানের মতো কাউকে যদি জেলা পর্যায় থেকে বাদ দিয়ে দিতেন, তাহলে ওখানেই ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতো। এমনটা হলে তো সাকিব-তামিমদের পেতেন না। তারা আসছে যেখান থেকে, সেখানে ফোকাস করতে হবে। আপনি এখন হাথুরুসিংহেকে বকা দিচ্ছেন। তার কাছে আছেই তো নাঈম-বিজয়রা। ওর কিচ্ছু করার নেই। ও কোথা থেকে খেলোয়াড় এনে খেলাবে। যারা জুনিয়র ক্রিকেটের কাঠামো করে, এটার উত্তর তাদের দেয়া উচিৎ। কেন আসছে না, কী করতে হবে। আমাদের হিউজ অ্যামাউন্ট পড়ে আছে। অনেক কোচ পড়ে আছে। হিউজ জায়গা পড়ে আছে। কেন প্রমোট হবে না। কেন হাথরুসিংহেকে বকা দিচ্ছি। যেখানে কথা বলা দরকার সেখানে বলেন। যে স্ট্রাকচার কেউ দেখে না, ন্যাশনাল স্ট্রাকচার ছাড়া। যেখান থেকে একটা খেলোয়াড় উঠবে আসবে। গাছ লাগানোর পর পরিচর্যা করলে এমনিতেই সে পরে ফল দেবে। পরিচর্যায় যদি ভুল করেন, ফলটা ওরকমই পাবেন। যেখানে পরিচর্যা করার সেখানে না করে হাথুরু, নাঈমকে বকা দিতে পারেন না। জুনিয়র লেভেলে ফোকাস করা ইমার্জেন্সি হয়ে গেছে।

এখনও আমরা তামিম-মাহমুদউল্লাহকে খুঁজছি। তার মানে আমরা উন্নতি করি নাই। ২০০৫ সালে যারা খেলা শুরু করেছে, তাদের ২০২৩-এ এসে খুঁজছি। আমরা কেন তামিমকে খুঁজব, মাহমুদউল্লাহকে খুঁজব। ভারত কি এখন ধোনিকে খুঁজছে? ওর চেয়ে বেটার খেলোয়াড় চলে আসছে।

যেখান থেকে খেলোয়াড় উঠে আসবে, সেখানে টাকা খরচ করতে হবে। ওই লেভেলটাকে আরও বেশি ফোকাস করতে হবে মোর দ্যান জাতীয় দল। জাতীয় দলে সে যখন চলে আসে, অলরেডি সে অভিজ্ঞ। সে অলরেডি ভালো খেলোয়াড়। তার পেছনে খরচ করার কিছু নেই। সেরাটা সে দেবেই। তার পারফরম্যান্স একটু ভালো হবে, সে যখন আরেকটু অভিজ্ঞ হবে। তার পেছনে বেশি টাকা, সময় খরচ করার কিছু নেই। অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে ১৭ সঠিক অবস্থানে যাচ্ছে কিনা, দায়িত্বটা সঠিক মানুষের কাছে আছে কিনা, দিস ইজ দ্য পয়েন্ট। এই জায়গাটায় জাতীয় দলের চেয়ে বেশি টাকা খরচ করতে হবে। খেলোয়াড়রা যখন জাতীয় দলে আসবে অটোমেটিক্যালি সে তার সামর্থ্য দেখাবে। আর যদি সেই সামর্থ্য না থাকে, হাথুরুসিংহে কেন বিশ্বের যত বড় কোচই আনেন কোনো লাভ হবে না। দিস ইজ দ্য ওয়ে। আপনি যদি ১০০ কোটি টাকা জাতীয় দলের জন্য খরচ করেন, ৫০০ কোটি টাকা জুনিয়র লেভেলে খরচ করতে হবে। ভারত কেন এত উন্নতি করেছে? ওদের ঘরোয়া কাঠামো অনেক শক্তিশালী।

প্রশ্ন: আপনার খেলোয়াড়ি সময়ে আমরা বিশ্বকাপে তিনটা ম্যাচ জিততাম,ওয়ানডে টিম এত উন্নতি করার পরও তিনটাই জেতে। এবার কী লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপে যাওয়া উচিৎ?

আফতাব: আমাদের যেটা আত্মবিশ্বাস, ওটা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটা সিনিয়র খেলোয়াড়কে বিশ্বকাপে রাখা উচিৎ। তাদেরকে বলা উচিৎ তোমরা তোমাদের মতো করে খেলো। ফুললি কনফিডেন্ট থাকো, যা হওয়ার হবে। প্রথমে ওদের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে হবে এই বিশ্বকাপের জন্য। এরপর অন্য চিন্তা করতে হবে। তারা (তামিম-মাহমুদউল্লাহ) যদি আসে, তাদের আত্মবিশ্বাস থাকবে কিনা আমার সন্দেহ। সবাই যদি সেই আত্মবিশ্বসাটা ফিরিয়ে দেয়, আমি নিশ্চিত ওরা শতভাগ দেবে। ওদের অভিজ্ঞতা অনেক এবং ওরা যদি সেরাটা দেয়, সেরা ফলাফলও আসার সম্ভাবনা বেশি।

প্রত্যেকে যদি প্রত্যেকের সেরাটা দেয়। তামিমের যদি কনফিডেন্স ব্যাক করানো হয়। তামিম যদি স্টার্ট ভালো করে। মিডলঅর্ডারে যারা আছে তারা যদি ফিনিশ করতে পারে।মাহমুদউল্লাহ ব্যাট করবে ৬-৭ এ। তার হয়তো রোল থাকবে ৩৫ ওভারের পরে। ওখানে নেমে পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে হবে। ও পজিটিভ ক্রিকেট তখন খেলবে, যখন ওর ভেতর আত্মবিশ্বাস থাকবে। ও যখন চিন্তা করবে আউট হলে বাদ, আউট হলে এইটা আউট হলে ওইটা। আউট হলে গালি খাব। তখন সে শর্টস খেলা ভুলে যাবে। তখন ওখানে রান করবে ৩০ বলে ২০। ৩০ বলে ২০ করা মানে ম্যাচটা হেরে যাওয়া। যদি আত্মবিশ্বাসী থাকে ৩০ বলে ৫০ করবে। তখন আমাদের রান হবে যাবে তিনশর কাছাকাছি। আমাদের ম্যাচ জেতার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।

প্রশ্ন: কোন বিষয়টিকে ফোকাস করলে বাংলাদেশের ফলাফল ভালো হতে পারে।

আফতাব: কনফিডেন্স হলো মূল অস্ত্র। এখনকার কাজ হবে বিশ্বকাপের জন্য টিমটাকে গোছানো। সিনিয়রদের মধ্যমণি করে পুরো দলকে একত্রিত করে বলা যে, শেষ বিশ্বকাপ হোক আর যাই হোক তোমরা তোমাদের সেরাটা চেষ্টা করো। তোমরাই হলে ‘অন ইন অল’। দ্যাটস ইট। যেহেতু আমাদের বোলিং অ্যাটাক খুবই ভালো, বিশ্বকাপে নিজেদের সেরা পারফর‌ম্যান্সের সম্ভাবনা আছে।

বিজ্ঞাপন

Nil Joler Kabbo
Bellow Post-Green View