প্রায় এক দশক পর এল বলিউড অভিনেত্রী জিয়া খান আত্মহত্যা মামলার রায়। ভারতের বিশেষ সিবিআই আদালত শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে এই আলোচিত মামলার রায় ঘোষণা করেন।
প্রেমিকা জিয়াকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলা থেকে মুক্তি দেয়া হয় অভিনেতা অভিনেতা সুরজ পাঞ্চোলিকে। তাকে এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেয় সিবিআই আদালত।
শুক্রবার ১২টার দিকে বিচারক এএস সৈয়দ রায় ঘোষণার সময় জানান, ‘সুরজের বিরুদ্ধে যা তথ্যপ্রমাণ রয়েছে তা উপযুক্ত নয়, তাই তাকে জিয়া আত্মহত্যায় প্ররোচণার সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় হলো’।
২০১৩ সালের ৩ জুন জুহুর অ্যাপার্টমেন্ট থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় জিয়া খানের মৃতদেহ। পরবর্তীতে জানা যায়, অভিনেত্রী সুরজের সন্তানের মা হতে চলেছিলেন। পুলিশ এটিকে আত্মহত্যা বললেও জিয়া খানের মা বলেছিলেন, খুনের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে।
সে বছরেই প্রেমিক সুরজ পাঞ্চোলিকে দায়ী করে জিয়ার লেখা সুইসাইড নোট খুঁজে পান তার বোন। পরে সেটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন জিয়ার মা রাবেয়া আমিন। এর দুদিন পর জিয়ার আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় সুরজকে গ্রেপ্তার করে মুম্বাই পুলিশ। কিছুদিন জেলে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান বলিউডের প্রভাবশালী ও বিতর্কিত অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে। জিয়ার মৃত্যুর প্রায় এক বছর পর ২০১৪ সালে মুম্বাই পুলিশের হাত থেকে সিবিআইয়ের হাতে যায় এই মামলা। বছর দুয়েক পর অর্থাৎ ২০১৬ সালে সিবিআই জানায় আত্মহত্যাই করেছেন বলি-নায়িকা। ফাউল প্লে-র সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যদিও সেই তত্ত্ব মানতে নারাজ জিয়ার মা রাবিয়া খান।
২০১৯ সালে সেশন কোর্টে এই মামলার বিচার পর্ব শুরু হয়। কিন্তু তা খুব বেশি দূর এগোয়নি। দীর্ঘ আট বছর ঝুলে থাকার পর ২০২১ সালের জুলাই মাসে জিয়ার আত্মহত্যার মামলা সেশন কোর্ট থেকে যায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। শুক্রবার সেই মামলারই রায় জানাল আদালত।
জিয়া খান ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দিল সে’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন। এরপর দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ২০০৭ সালে অভিনয় করেন রাম গোপাল ভার্মার ‘নিঃশব্দ’ ছবিতে। ছবিটিতে অমিতাভ বচ্চনের বিপরীতে অভিনয় করে সবার নজর কাড়েন জিয়া।
পরে অভিনয় করেন ‘গজনি’ (২০০৮) ও ‘হাউসফুল’ (২০১০) ছবিতে। জিয়া খানের বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যে। মা রাবেয়া আমিনের সঙ্গে যুক্তরাজ্য থেকে মুম্বাইয়ে আসেন তিনি। থাকতেন জুহু বিচ-সংলগ্ন সাগর সংগীত নামের একটি অ্যাপার্টমেন্টে।