কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক সন্ত্রাসী হামলায় গতকাল সারাদিনে ৪ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এই হামলাগুলোর কারণে আহত হয়েছেন আরো ২ জন রোহিঙ্গা।
গতকাল (৫ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার বিকেলে এবং রাতে উখিয়া উপজেলার ৪, ১৫ ও ১৭ নম্বর ক্যাম্পে এইসব সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা মিয়ানমারের রাখাইন ষ্টেটের সন্ত্রাসী গ্রুপ আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি আরসার সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল বিকেলে ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ/১৬ ব্লকে অজ্ঞাত একদল দুষ্কৃতকারী ইমাম হোসেন নামক একজন রোহিঙ্গা যুবককে সরাসরি গুলি করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে এপিবিএন ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কেন বা কারা এই হত্যাকাণ্ড করেছে তা তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে পুলিশ।
গতকাল রাত ১০টার দিকে আরসার ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ১৫ নম্বর জামতলী রোহিঙ্গা অপর রোহিঙ্গা গ্রুপ আরএসওর সদস্যদের ওপর গুলি ও দা ছুরি দিয়ে হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি হামলায় ৪ জন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হয়। আহতদের ক্যাম্পে অবস্থিত এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মোঃ জোবায়ের (১৬) নামে একজন রোহিঙ্গা মারা যান।
হাসপাতালে নেওয়ার পর আনোয়ার সাদেক (১৭) নামে অপর একজন রোহিঙ্গা নিহত হয়। এই ঘটনায় আহত আরও ২ জন রোহিঙ্গাকে এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঘটনার পরপরই এপিবিএন ও থানা পুলিশ রাতে সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে।
এছাড়াও গতকাল রাত ৯টার দিকে আরসার একদল সন্ত্রাসী ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি ব্লকে গিয়ে আবুল কাশেম নামে একজন রোহিঙ্গাকে তার বাড়ি থেকে বের করে উপুর্যুপরি গুলি করে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। নিহত আবুল কাশেম ওই ক্যাম্পের আবুল বশরের পুত্র এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পে আরসার বিরুদ্ধে শান্তি শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
একদিনেই আরসা সন্ত্রাসীদের হাতে ৪ জন রোহিঙ্গা হত্যাকান্ডের ঘটনায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। ২দিন আগে বান্দরবান জেলার একটি আদালতে আরসার প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনিসহ তার ৪৯ জন সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।