ওয়ানডে ক্রিকেটে দুশ রানের জুটি পাওয়া যাবে কয়েক ডজন। কার্ডিফে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২২৪ রানের জুটি সে বিচারে হয়তো নতুন ইতিহাস নয়। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের যে চিত্র ছিল সেখান থেকে মূল্যায়ন করলে পঞ্চম উইকেট জুটি যেন রূপকথা। জাতীয় দলের অধিকাংশ ক্রিকেটারের সাবেক কোচ নাজমুল আবেদিন ফাহিম মনে করেন এই জুটি বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
‘এতদিন তো উদাহরণ দিতাম বাইরের দেশের ক্রিকেটাররা এটা করলো, ওটা করলো। এখন আমাদের ক্রিকেটেই যুক্ত হলো। এখন ঘরের মধ্যেই উদাহরণ দাঁড়িয়ে গেল। বাইরের উদাহরণ দিতে হবে না। সামনের দিনগুলোর জন্য এটা একটা বিশাল ব্যাপার।’
টার্গেট ২৬৫। জয়ের সুযোগ দুই দলেরই সমান। ৩৩ রান তুলতেই চার উইকেট হারিয়ে বসলো বাংলাদেশ। হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করা ছাড়া কী ভাবার থাকে তখন! হার-জিতের কথা না ভেবে উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করলেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ। দুই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জেতালেন। উইকেট পড়ল আর মাত্র একটি। সাকিব ১১৪ করে যখন ফেরেন জয় থেকে ৮ রান দূরে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ১০২ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ বের করে নিলেন ১৬ বল হাতে রেখে। ধ্বংসস্তূপ থেকে এভাবে যে ফিরে আসা যায় তার নতুন নজির গড়ল বাংলাদেশ। তা দেখে মুগ্ধ নাজমুল আবেদিন।
‘লংগার ভার্সনে অনেক বাজে অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে ফিরে আসতে দেখেছি। ওয়ানডেতে প্রথম। চারটা উইকেট পড়ে গেছে। বড় টার্গেট সামনে। সেটা চেজ করতে চাওয়া এবং চেষ্টা করা। এই কাজ যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্য কঠিন। দুর্দান্ত এই অভিজ্ঞতা হয়তো ক্রিকেট ইতিহাসে খুব কম আছে। ২২৪ রানের পার্টনারশিপ হয়তো পাওয়া যাবে। কিন্তু এত বাজে অবস্থা থেকে আসাটা কিন্তু বিরল। এখানেই সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব এই দুই ব্যাটসম্যানের।’
বিরল জুটি গড়ে জয়ের পেছনে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মানসিকতার বড় পরিবর্তন ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন নাজমুল আবেদিন, ‘গত দুই বছরে বেশ কয়েকটি সিরিজে ভালো করায় তাদের মানসিকতায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। টিমের পরিকল্পনার বাইরে গিয়েও হয়তো তারা বড় বড় স্বপ্ন দেখে।’