এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে দেশের ১১ বিশিষ্ট নাগরিক।
বুধবার ৮ মে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ জানতে পেরেছি, গত ৪ মে শনিবার বাগেরহাটের সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া এলাকায় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শনিবার সুন্দরবনের লতিফের ছিলা নামক জায়গায় স্থানীয় জেলেরা এই আগুন দেখতে পান।
সবশেষ জানা যায়, ফায়ারসার্ভিস, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় আগুন তিনদিন পর নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে তন্মধ্যে সুন্দরবনের ওই এলাকার যৌগিক বাস্তুতন্ত্র, বন্যপ্রাণী ও বনজ সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
এটা খুবই দুঃখজনক এবং উদ্বেগের বিষয়, কী কারণে সুন্দরবনের গভীরে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে তা স্পষ্টভাবে এখন পর্যন্ত জানাতে পারেনি বন কর্তৃপক্ষ। তবে, সুন্দরবনে এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। যেহেতু ধারাবাহিকভাবে এইরকম ঘটনা ঘটছে, তাই এর কারণ অনুসন্ধান ও মানবসৃষ্ট প্রতীয়মান হলে দায়ীদের চিহ্নিত করতে সঠিক তথ্য উদঘাটন করা বাঞ্ছনীয়।
আমরা আরও জেনেছি যে, গত ২৪ বছরে সুন্দরবনে ২৬ বার আগুন লেগে সরকারি হিসেবে প্রায় ৭৫ একর বনভূমি ধ্বংস হয়েছে এবং ২৪টি তদন্ত প্রতিবেদনে ১৫ বার বনজীবীদের ফেলে আসা আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সুন্দরবনের জমি দখল ও প্রাণবিনাশী কর্মকাণ্ডের সাথে এই অগ্নিকাণ্ডের কোন সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার।
তাই, আমরা এশিয়ার ফুসফুসখ্যাত সুন্দরবনে মানবসৃষ্ট অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধে বনবিভাগ ও অনান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য, পরিবেশকর্মী, সুন্দরবন গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে যেকোন সম্ভাব্য দুর্ঘটনা মোকাবেলায় বিজ্ঞানভিত্তিক আগাম প্রস্তুতি ও তড়িৎ পদক্ষেপের জোর দাবি জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন: সুলতানা কামাল, রাশেদা কে. চৌধুরী, খুশি কবীর, ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ড. ইফতেখারুজ্জামান, শারমিন মুরশিদ, এমএস সিদ্দিকী, অধ্যাপক আকতার মাহমুদ, অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান এবং শরীফ জামিল।