সারা দেশে গত ৬ মাসে ৭৬টি নৌ দুর্ঘটনায় ৭১ জন নিহত, ২২৬ জন আহত ও ৯৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২ নারী ও ১৩ শিশু রয়েছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এক হিসাবে এই পরিসংখ্যান ওঠে আসে।
অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় নৌপথে যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রলারসহ ছোট ছোট দুর্ঘটনায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। শিপিং এন্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ) নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে।
আজ মঙ্গলবার সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিকট-অতীতে সংঘটিত বিভিন্ন নৌ দুর্ঘটনার উদাহরণ দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, নিখোঁজদের সন্ধান না পাওয়ার কারণে তাদের সলিল সমাধি হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।
এই হিসেবে ছয় মাসে প্রাণহানির সংখ্যা ১৬৪। তবে এ বছর লঞ্চডুবির মতো বড় কোনো দুর্ঘটনা ও একসঙ্গে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেনি। এসসিআরএফ ‘এর প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারিতে ১০টি দুর্ঘটনায় দুই নারী ও দুই শিশুসহ ৯ জন নিহত, ৩৭ জন আহত ও ২০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন; যার মধ্যে দুই নারী ও দুই শিশু রয়েছে।
আর আহত ও নিখোঁজের সংখ্যা যথাক্রমে ৬৭ ও ৩৮। মার্চে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৮টি; এতে চার নারী ও পাঁচ শিশুসহ ১৫ জন নিহত, ৫০ জন আহত ও ১১ জন নিখোঁজ হয়েছেন। এপ্রিলে ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত হয়েছে; যার মধ্যে এক নারী রয়েছেন। এই মাসে আহত ও নিখোঁজ হয়েছে যথাক্রমে দুই জন ও ১৬ জন। মে মাসে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১২টি: এতে দুই নারী ও দুই শিশুসহ ১৩ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত ও সাতজন নিখোঁজ হয়েছেন।
জুনে সাতটি দুর্ঘটনায় এক নারী ও দুই শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। আহত ও নিখোঁজের সংখ্যা যথাক্রমে ২৪ ও এক। এসসিআরএফ সভাপতি আশীষ কুমার দে বলেন: বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে নৌ দুর্ঘটনায় নিখোঁজ কাউকে পরবর্তী সময়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের সলিল সমাধি (মৃত্যু) হয়েছে বলেই ধরে নেয়া হয়। এই বিবেচনায় গত ছয় মাসে নৌ দুর্ঘটনায় লাশ উদ্ধার হওয়া ৭১ জন ও নিখোঁজ ৯৩ জন মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা ১৬৪।
আশীষ কুমার দে জানান: তাঁদের পর্যবেক্ষণে নৌ দুর্ঘটনা সহনীয় মাত্রায় নেমে আসার পেছনে পাঁচটি প্রধান কারণ চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলো হলো:
১. নৌখাতের বিগত সময়ের নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ।
২. সামাজিক সংগঠনগুলোর দুর্ঘটনা বিরোধী তৎপরতার কারণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
৩. নৌ মন্ত্রণালয়ের কঠোর নজরদারির ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।
৪. নৌপথে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের টহল জোরদার।
৫. যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে উন্নতমানের নৌযানের সংখ্যা বৃদ্ধি।