ব্যাটে নেমেই বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন রুমানা-ফারজানা জুটি, দুই সেঞ্চুরিতে যোগ করেছেন অবিচ্ছিন্ন ২৬৬ রান। বোলিংয়ে সেই কীর্তিকেও ছাপিয়ে গেলেন ফাহিমা খাতুন। মাত্র ৫ রানে ৮ উইকেট শিকার তার। টাইগ্রেস লেগস্পিনারের বোলিং ফিগারটা: ১০-৬-৫-৮! তাতে ৯০ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে লাল-সবুজরাও।
বুধবার সাউথ আফ্রিকার পচেফস্ট্রমে গা গরমের ম্যাচে নামে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২ উইকেটে ২৭০ রান তোলে। রুমানা-ফারজানা ৪৭.২ ওভার অবিচ্ছিন্ন থেকে ২৬৬ রানের জুটি গড়েন। জবাবে ফাহিমার ঘূর্ণিতে প্রতিপক্ষ নর্থ ওয়েস্টকে ৪৫.৪ ওভারে ১৮০ রানেই গুটিয়ে দেয় টিম টাইগ্রেস।
রান তাড়া করতে নেমে দারুণ ব্যাট করেছে স্বাগতিকদের টপঅর্ডার। ক্রনজেকে (৯) ফিরিয়ে প্রথম আঘাত হানেন জাহানারা। পরে ৫৭ রানের জুটি গড়েন ব্রিটস এবং নেপ। দুজনকেই ফিরিয়েছেন ঘূর্ণি ঝড় তোলা ফাহিমা। অধিনায়ক ব্রিটসকে (৬২) নিগারের গ্লাভসে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে, আর নেপকে ফেরান (২০) রুমানার ক্যাচ বানিয়ে।
সেখান থেকে ফাহিমার ঘূর্ণিতে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি নর্থ ওয়েস্ট নারী দল। ২৭তম ওভারের শেষ বলে বোথাকে বোল্ড করার পর ৩০তম ওভারে তিন উইকেট তুলে নেন ফাহিমা।
ওভারের প্রথম বলে মোসালাকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে আর দ্বিতীয় বলে হেয়ান্সকে বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান। কিন্তু রাম্পাই এসে কয়েকটি বল ঠেকিয়ে দেন। ওই ওভারের শেষ বলে তাকেও রুমানার তালুবন্দী করেন ফাহিমা।
পরে হডজম্যানকে বোল্ড আর ইয়েকলেকে জাহানারার ক্যাচ বানিয়ে নিজের সপ্তম ও অষ্টম উইকেটটি তুলে নেন ফাহিমা। আরও দুটি ওভার করার সুযোগ পান কোটা পূরণের আগে। কিন্তু নবম উইকেটটি তুলে নিতে পারেননি।
ফাহিমা স্পেলে মেডেন করেছেন ৬টি ওভার। টাইগ্রেস লেগস্পিনারের বোলিং ফিগারটা: ১০-৬-৫-৮! দেখে মনে হতেই পারে- ইশ্, ২৫ বছর বয়সী তারকার বোলিংটা যদি আন্তর্জাতিক ম্যাচে হত!
আগে সাউথ আফ্রিকা সফরের মূল পরীক্ষার প্রস্তুতি এই ম্যাচে দারুণ কীর্তি গড়েছেন রুমানা আহমেদ ও ফারজানা হক। দুই টাইগ্রেস ব্যাটসওম্যান জুটি বেধে ২৬৬ রান তুলেছেন। সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন দুজনই।
উদ্বোধনী জুটি সানজিদা ইসলাম (৪) ও মুর্শিদা খাতুন (০) দ্রুত সাজঘরে ফেরার পর ক্রিজে জোট বাধেন রুমানা এবং ফারজানা। ৪৭.২ ওভারজুড়ে তাদের আর বিচ্ছিন্ন করতে পারেননি প্রতিপক্ষ বোলাররা।
শুরুতে ধীরগতিতে রান তুলেছেন। সময় যত গড়িয়েছে, ব্যাট চওড়া করেছেন। ২৫তম ওভারে কেবল একশর কাছে পৌঁছা দলটি আড়াইশ পেরিয়ে যায় তাতে।
প্রথমে শতক তুলে নেন রুমানা। চার মেরে ৯৫ থেকে ৯৯এ আসা তারকা পরের চার বলে রান নিতে পারেননি। ৪৫তম ওভারের শেষ বলটিতে এক নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন, সেটি ফারজানার সঙ্গে ২০০ রানের জুটিও পূর্ণ করে দেয়।
১২ চারে ১৩০ বলে শতক তুলে নেন ২৬ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটসওম্যান রুমানা। শেষপর্যন্ত ১৩৬ রানে অপরাজিত থাকেন, ২০ চারে ১৪৪ বলের ইনিংস সাজিয়ে।
রুমানা সেঞ্চুরির পর রান তোলার গতি বাড়ান, অন্যপ্রান্তে সঙ্গ দিয়ে যাওয়া ফারজানা শেষদিকে এসে ব্যাট চওড়া করেন। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে সেঞ্চুরিও তুলে নেন ১৪২ বলে। শেষপর্যন্ত ১০ চারে সাজানো ১৪৩ বলের ইনিংসটি ১০২ রানে নিয়ে অপরাজিত থাকেন।