ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা ফলাফলের প্রেক্ষাপটে বিএসটিআই অনুমোদিত পাস্তুরিত দুধে ব্যাকটেরিয়া, অ্যান্টিবায়োটিক, ফরমালিন, ডিটারজেন, কলিফর্ম আছে কিনা তা পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের ল্যাবরেটরি, আইসিডিডিআরবি’র ল্যাবরেটরি এবং সাভারের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ল্যাবরেটরিতে আলাদাভাবে পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে ফলাফল প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলেন আদালত।
সেই সাথে এই চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিএসটিআইকে পাস্তুরিত দুধের নমুনা সংগ্রহ করে দিতে বলা হয়েছে। এবং এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৩ জুলাই দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
আজ আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক এবং ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ। বিএসটিআই’র পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার সর্দার এম আর হাসান। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার ফরিদুল ইসলাম।
এর আগে গত ৩০ জুন হাইকোর্ট সাতটি কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা ফলাফল আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী আজ আদালতে ঢাবি শিক্ষকদের করা পাস্তুরিত দুধ গবেষণা ফলাফল তুলে ধরার পর আদালত আদেশ দেন।
গত ২৫ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক পাস্তুরিত দুধে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতির কথা প্রকাশ করেন। দুধ পরীক্ষার ফলাফল তুলে ধরে বলা হয় বাজারে থাকা প্রায় সব দুধেই ক্ষতিকর ডিটারজেন্ট ও অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে। এরপরই তার গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সরকারি কয়েকটি সংস্থা ও দুধ ব্যবসায়ীরা। এছাড়া সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অধ্যাপক ফারুকের গবেষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এটি প্রমাণে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।
এদিকে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করেন অধ্যাপক আ ব ম ফারুক।
শনিবার এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্বমানের ল্যাবে পরীক্ষা করে দশটি স্যাম্পলের সবগুলোতেই অ্যান্টিবায়োটিক পেয়েছে তার গবেষক দল। আগের পাঁচটি কোম্পানির সাতটি পাস্তুরিত প্যাকেটজাত দুধের একই জায়গা থেকে সংগৃহীত নমুনা এবং একই জায়গা থেকে খোলা দুধের সংগৃহীত তিনটি নমুনা অর্থাৎ মোট দশটি নমুনা উন্নত ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এতে সবগুলো নমুনাতেই অ্যান্টিবায়োটিক সনাক্ত হয়।
আর আগের গবেষণায় তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেলেও এবার চারটি অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আগের গবেষণায় পাওয়া যায়নি এমন নতুন দুটি অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া গেছে।