জেন-পিয়ের অ্যাডামস। ৩৯ বছর কোমায় থেকে মারা গেলেন ফ্রান্সের সাবেক ডিফেন্ডার। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগকালে বয়স হয়েছিল ৭৩। যার চার দশকই কেটে গেছে চেতনাহীনভাবে। দীর্ঘ এ সময়ে তাকে দেখেশুনে-যত্নে আগলে রেখেছিলেন সহধর্মীনী বের্নাদেত্তে।
চিকিৎসকের ভুলে কোমায় চলে যান অ্যাডামস। হাঁটুর চোটে অস্ত্রোপচার টেবিলে গিয়েছিলেন। সাধারণ একটি কাঁচি-ছুরির কর্ম ছিল সেটি। কিন্তু অস্ত্রোপচারের সময় জুনিয়র ডাক্তার চেতনানাশক প্রয়োগে ভুল করে বসলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাঁধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। যার মাশুল দিয়েছেন আমৃত্যু আর জ্ঞান না ফেরার মধ্য দিয়ে।
অ্যাডামসের জন্মভিটে সেনেগাল। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল সময়ের মধ্যে খেলেছেন ফ্রান্স জার্সিতে। ক্যারিয়ার ২২ ম্যাচের। লিগ ওয়ানে নিমসের হয়ে ১৯৭০-৭৩ সাল সময়ে খেলেছেন, ১৯৭৭-৭৯ সময়ে পিএসজির হয়ে খেলেছেন দাপটে। খেলেছেন নিসেঁও।
একদিন অনুশীলনে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন অ্যাডামস। ১৯৮২ সালের মার্চের ঘটনা সেটি। অস্ত্রোপচার দরকার হয়। সেদিন মোট আট রোগীর অস্ত্রোপচার ছিল। অ্যাডামসকে চেতনানাশক দিতে ভুল করে বসেন শিক্ষানবিশ এক স্বাস্থ্যকর্মী।
শিক্ষানবিশ স্বাস্থ্যকর্মীটি পরে ভুল স্বীকার করে নেন। কাজটি ঠিকঠাক করতে পারেননি বলে স্বীকার করে তার শাস্তিও হয়। একমাসের স্থগিত নিষেধাজ্ঞা ও ৭৫০ ইউরো জরিমানা করা হয়।
সেসময় অস্ত্রোপচারের ১৫ মাস পর অ্যাডামসকে বাড়ি নিয়ে আসেন বের্নাদেত্তে। কারণ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আর তার দেখাশুনার ভার নিতে চাইছিলেন না। এরপর নিজ বাড়িতে চর দশক ধরে স্বামীকে আগলে রাখেন বের্নাদেত্তে। অর্থকষ্ট গেছে, সীমাহীন এক ঘেয়েমি। কিছুতেই দমে যাননি। নিথর জীবনসঙ্গীর জন্য তার ভালোবাসার তুলনা হয় না বলে গল্প হয়ে ফিরছে সবার মুখে মুখে।