নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লায় মসজিদে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৩৭ জনের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে দিতে তিতাস গ্যাস কোম্পানির প্রতি নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদালতের আদেশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসককে ভুক্তভোগীদের মাঝে এই টাকা বিতরণ করতে বলা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকারের করা জনস্বার্থমূলক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদালত তার রুলে, বিস্ফোরণ দগ্ধ ৩৭ জনের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, গণপূর্ত সচিব, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)’র চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো)ও বায়তুস সালাত জামে মসজিদ কমিটিসহ ১৩ বিবাদিকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আজ আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্তি অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর-উস সাদিক।
এদিকে আজকের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে জানিয়ে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিস্ফোরেণের ঘটনার দায় আসলে কার, সে বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এখনও দায় নিরূপন করেনি। ফলে এ আদেশ দায় নিরূপনের আগেই দায় চাপিয়ে দেওয়ার মত। তাই রাষ্ট্রপক্ষ এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবে।’
নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে শুক্রবার এশার নামাজের সময় বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সে সময় মসজিদে থাকা অর্ধশতাধিক মানুষের সবাই দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে ৩৭ জনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৮ জন। এই ঘটনায় নিহত ও দগ্ধদের জন্য ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার সোমবার জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেন।