নির্মাণের দীর্ঘ ২৬ বছর পর অবশেষে সংস্কারের পথে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে নির্মিত ‘অমর একুশে’ ভাস্কর্য। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার থেকে ভাস্কর্যটি মেরামতের কাজ শুরু করেছে।
১৯৯১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে মহান ভাষা শহীদদের স্মরণে শিল্পী জাহানারা পারভীনের নকশার ভিত্তিতে ‘অমর একুশে’ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকে সংস্কার না করা ও প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভাস্কর্যটি দুরবস্থার দিকে যাচ্ছিল। প্রশাসনকে বারবার অবহিত করার পর এ বিষয়ে প্রথমবারের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, সম্প্রতি শিল্পী জাহানারা পারভীনের সঙ্গে আলোচনার পর তার তত্ত্বাবধায়নেই ভাস্কর্যটি সংস্কার করা হচ্ছে। অমর একুশে ভাস্কর্যটি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সম্পত্তি। অনেক আগেই এটি সংস্কার করার কথা ছিল। ভাস্কর্যটি সংস্কারের বিষয়ে কোথাও থেকে কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া বরাদ্দকৃত অর্থেই সংস্কারের উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। আশা করি অতি দ্রুত ভাস্কর্যটি তার আগের রুপে ফিরে আসবে।
সংস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে ভাস্কর্যটির স্থপতি শিল্পী জাহানারা পারভীন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, নির্মাণের দীর্ঘদিন পর ভাস্কর্যটির প্রথম সংস্কার কাজ চলছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে আমার তত্ত্বাধানে কয়েকজন প্রশিক্ষিত শ্রমিক দ্বারা সংস্কার কাজটি পরিচালিত হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত অর্থ সংকুলান না হওয়ায় এখন শুধু মূল স্কালপচারের কাজটি করা হচ্ছে। সংস্কার কাজটি সম্পূর্ণ হতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে।
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষার্থে বাংলাদেশে যেসব ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত ‘অমর একুশে’ ভাস্কর্য। মাতৃভাষা বাংলার জন্য যেসব দামাল ছেলে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি রাজপথে অকাতরে রক্ত ঢেলে দিয়েছে তাদের স্মৃতিকে ধারণ করে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে।
সাধারণ শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ভাস্কর্যটির মেরামতের জন্য বারবার দাবি জানিয়ে আসছিলো। চ্যানেল আই অনলাইনসহ বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছিলো ভাস্কর্যটি মেরামতের ব্যাপারে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বাংলা বিভাগের বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সংস্কারের অভাবে এতদিন ভাস্কর্যটি দেখলে মনে হতো এর অভিভাবক নেই। প্রশাসনের এ ধরনের ইতিবাচক উদ্যোগে আমরা খুশি।’