আরফান আহমেদ। টিভি নাটকের জনপ্রিয় মুখ। পাশাপাশি তিনি নাটক লিখছেন, পরিচালনা করছেন। এবার তিনি ২৬ জন তারকা নিয়ে একটি টেলিছবি তৈরি করেছেন। নাম ‘বিগ শট’। তার সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন সাইদুর রহমান রাসেল। অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, তৌকীর আহমেদ, মাহফুজ আহমেদ, আজাদ আবুল কালাম, ফজলুর রহমান বাবু, মামুনুর রশীদ, শহিদুল আলম সাচ্চু, এটিএম শামসুজ্জামান, মৌসুমী হামিদ, স্বাগতা, প্রভা প্রমুখ। এবার ঈদের দিন বেলা সাড়ে ১১টায় চ্যানেল আইয়ে দেখানো হবে টেলিছবিটি। ‘বিগ শট’ ও অন্যান্য বিষয়ে চ্যানেল আইয়ের অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন আরফান।
কেমন আছেন?
ভারমুক্ত আছি।
ভারমুক্ত কেন?
আমি তো পরিচালক না। কিন্তু এবার ঈদে একটি টেলিছবি নির্মাণ করে চ্যানেল আইয়ে জমা দিলাম। এত তারকা নিয়ে কাজ, তারপর আবার আমি পরিচালক হিসাবে নিয়মিত না। তার ওপর চ্যানেল আই আমার ওপর আস্থা রেখেছে। সব কিছু মিলিয়ে একটু চাপ ছিল। কাজ শেষ করার পর সেই চাপ চলে গেছে।
টেলিছবির নাম ‘বিগশট’ কেন?
আমার এখানে যারা অভিনয় করেছেন, তারা সবাই বড় তারকা। টেলিছবির গল্পেও তারা বিভিন্ন অঙ্গনের বড় মানুষ। এজন্য নাম দিয়েছি ‘বিগ শট’।
গল্পটা কেমন?
এখানে আসলে নির্দিষ্ট কোনো গল্প নেই। আবার ‘ওয়ান ম্যান শো’ ধাঁচের কোনো টেলিছবিও না এটা। কয়েকটি বড় চরিত্রের সমম্বয়ে তৈরি হয়েছে এটি।
এত নামি তারকাদের শিডিউল মেলাতে সমস্যা হয়নি?
সমস্যা তেমন হয়নি। দেড় মাস আগে থেকে বলে রেখেছিলাম। আসলে আমার সেটে যারা কাজ করেছেন, তাদের সবার ভালোবাসা আছে আমার প্রতি। এজন্য তারা নিজেদের সঙ্গে কথা বলে সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন নিজেরাই।
শুটিংয়ের সময় কোনো সমস্যা হয়েছে?
কিছুটা পোহাতে হয়েছে। সবাই বড় তারকা। অনেকে নিজের মতো সেটে এসেছেন। ফলে যেখানে ৯টার সময় শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল, সেখানে ১২টার সময় শুরু করতে হয়েছে। এজন্য আমার ইউনিটের ছেলেরা মন খারাপ করেছিল কিন্তু আমি তাদের বুঝিয়েছি।
শুটিংয়ে ভালো লাগার কথা বলুন।
শুটিংয়ে বড় বড় তারকারা যেমন দেরিতে এসেছেন আবার সেটা পুষিয়েও দিয়েছেন। অনেকে ভেবেছেন তার দুই কি তিনটা দৃশ্য, কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু দুয়েকটি দৃশ্যই নিতে হয়েছে দুই দিন ধরে। তারা অনেক রাত পর্যন্ত শুটিংয়ে সময় দিয়েছেন। নির্ধারিত দৃশ্য শেষ করে তবেই সেট ছেড়েছেন। এটা খুব ভালো লেগেছে আমার।
আপনি অভিনয়শিল্পী, পরিচালক হিসেবে কেমন উপভোগ করছেন?
কখনো মনে হয়েছে আমি পরিচালক, আবার কখনো মনেই হয়নি। কারণ যারা আমার সেটে অভিনয় করেছেন, তারা নিজেরাও সবাই বড় নির্মাতা। তাদের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি আমি। যখন আমার কথা তারা শুনে সেভাবে কাজ করছিলেন, তখন মনে হয়েছে, আমি নির্মাতা। আবার অনেক সময় মনে হয়েছে, আমরা সবাই এ টেলিছবির নির্মাতা।
এবার ঈদে কোন কোন নাটকে অভিনয় করেছেন?
অনেকগুলো নাটক আর টেলিছবিতে কাজ করেছি। এর মধ্যে চ্যানেল আইতে প্রচারিত হবে সাজ্জাদ সুমনের পরিচালনায় টেলিছবি ‘বিফলে মূল্য ফেরত’, বাংলাভিশনে সাগর জাহানের ‘এভারেজ আসলাম’, এটিএন বাংলায় একই পরিচালকের ‘নসু ভিলেন’, এসএ টিভিতে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘বিশেষ অজ্ঞগণ’, গাজী টিভিতে অরণ্য আনোয়ারের ‘রয়েল ডিষ্ট্রিক্ট’। এছাড়া আরও কয়েকটি কাজ করেছি।
ঈদে আপনার অভিনীত কোন চরিত্রটি নিয়ে আলাদা করে বলতে চান?
নসু ভিলেন। এখানে মজার একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। চশমা পরেও আমি অন্ধের ভূমিকায় অভিনয় করেছি। আমার ধারণা দর্শক নাটকে এই চরিত্রটি খুব ভালোভাবে গ্রহণ করবে।
নিয়মিত পরিচালনা করবেন?
এখন ভালো লাগছে, করছি। বাকিটা সময় বলবে।
আপনি তো চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন।
চলচ্চিত্র অনেক বড় ক্যানভাস। আমার ভয় হয়, চলচ্চিত্রে গিয়ে নিজেকে না হারিয়ে ফেলি। কারণ এর আগে অনেকেই তো হারিয়ে গেছেন। আমি নাটকেই ভালো আছি।
আমাদের টিভিরুম বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলো দখল করে নিয়েছে।
এ কথা আমি একদমই মানি না। কারণ রাস্তায় বের হলে যখন ১০ জন মানুষ আমার সঙ্গে সেলফি তুলতে চায়, তখন এ কথার কোনো বাস্তব ভিত্তি দেখি না। আমাদের দর্শক নাটক দেখে আবার দেখে না, এমন একটা পর্যায়ে আছে।
সেটা আবার কেমন পর্যায়?
দর্শক সবকিছুই দেখে। আমাদের হুমায়ূন ফরীদি ভাই একটা কথা বলতেন, ‘আমাদের দর্শকের সমস্যা আছে।’ কিন্তু আমি বলব, সম্ভবত আমাদের সমস্যা আছে। নয়তো কেন আমরা দর্শকদের নাটকের প্রতি আকৃষ্ট করতে পারছি না।