সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রায় তিন কোটি অ্যাকাউন্টের (২ কোটি ৯০ লাখ) তথ্য হ্যাকাররা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তারা নিজেরাই এ তথ্য স্বীকার করে বিষয়টিকে নিরাপত্তা বিপর্যয় হিসেবে দেখছে।
শুক্রবার রাতে ফেসবুক জানায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২ কোটি ৯০ লাখ আইডি হ্যাকাররা দুই ধাপে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
হ্যাকাররা প্রথমে ১৫ মিলিয়ন (১ কোটি ৫০ লাখ) আইডির ব্যক্তিগত তথ্য নিয়েছে। এর মধ্যে ওই আইডিগুলোর নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ইত্যাদি রয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে হ্যাকাররা, ১৪ মিলিয়ন (১ কোটি ৪০ লাখ) আইডির নাম (আইডি নেম), জেন্ডার, লোকেশন, রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস, হোম টাউন, সিটি, ধর্ম, জন্মদিন, জন্মস্থান, কর্মস্থল, শিক্ষাগত প্রতিষ্ঠানের নামগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
এছাড়াও আইডির ব্যক্তিটি শেষ দশটি স্থানের যেখানে যেখানে ট্যাগ হয়েছিল সেগুলোর তথ্য নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
ফেসবুক বলছে, হ্যাকাররা ডিজিটাল লগিং কোড ব্যবহার করে এই আইডিগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এটাকে নিরাপত্তা বিপর্যয় হিসেবে দেখছে।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা এফবিআইয়ের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেছে, ইতোমধ্যে এফবিআই অনুসন্ধান ও তদন্ত শুরু করেছে। এর পেছনে কে বা কারা জড়িত রয়েছে তা তদন্তের স্বার্থে বলা যাবে না। তবে খুব শীঘ্রই এফবিআই তাদের চিহ্নিত করবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ফেসবুক, এর সক্রিয় ইউজার অ্যাকাউন্ট ১৮০ কোটিরও বেশি। এরমধ্যে ৮৭ শতাংশই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহার করেন।
অনলাইন আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপত্তা ভঙ্গ হওয়ার অভিযোগ এনে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন হ্যাকের শিকার হওয়া ফেসবুক ব্যবহারকারী। তবে, সেই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ১১ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি ল’ ফার্মের আইনজীবী গ্যারেথ পোপ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ফেসবুক ব্যবহারকারীরা চাইলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবেন। এ আইনের ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের জরিমানা আদায় করার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে।
চলতি বছরের মে মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জিডিপিআর এর ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশন এর গোপনীয়তা আইন চালু করা হয়। গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতেই এই আইনটি করা হয়। আইন অনুসারে যে কেউ তথ্য নিরাপত্তার কারণে ‘নাগরিক অভিযোগ’ দায়ের করতে পারেন।
কিন্তু যদি কেউ তার ডিভাইসে আইডি খুলে রেখে যান, আর সেটা যদি হ্যাকারদের হাতে পড়ে তারপর কেউ ডেটা নিরাপত্তার অভিযোগ করলে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না।