চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

হোয়াইটওয়াশের মঞ্চে দুর্বার ইমরুল-সৌম্য

চট্টগ্রাম থেকে: ২৮৭ রানের লক্ষ্য টপকানোর চ্যালেঞ্জ। প্রথম বলেই আউট লিটন দাস। শুরুর ধাক্কা দ্রুতই সামলে নিলেন ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। দুর্বার গতিতে ছুটল তাদের ব্যাট। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে দুজনই ইনিংস রাঙালেন সেঞ্চুরিতে। বাংলাদেশ পেল দাপুটে জয়।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে টানা তৃতীয়বার দলটিকে হোয়াইটওয়াশ করল টিম টাইগার্স।

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: জিম্বাবুয়ে ২৮৬/৫ (৫০ ওভার); বাংলাদেশ: ২৮৮/৩ (৪২.১ ওভার)

৯২ বলে ১১৭ রানের দুরন্ত এক ইনিংস খেলে সৌম্য যখন সাজঘরে ফেরেন জয় থেকে তখন ৬৭ রান দূরে বাংলাদেশ। একটু ধীরগতিতে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার পর আরও ১৫ রান যোগ করে আউট হন ইমরুল। মুশফিকুর রহিম ২৮ ও মোহাম্মদ মিঠুন ৭ রানে অপরাজিত থেকে শেষ করেন ম্যাচ। ৪৭ বল আগেই বাংলাদেশ পায় ১৩তমবার প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশের সাফল্য।

জাতীয় দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকা সৌম্য ৫০ রান করেন ৫৪ বল খেলে। ৮১ বলেই ছুঁয়ে ফেলেন সেঞ্চুরি। পরের ৫০ রান আসে মাত্র ২৭ বলে। ৯টি চার ৬টি ছক্কায় সাজান ইনিংসটি।

ইমরুল ফিফটি ছুঁয়ে ফেলেন সৌম্যর আগে মাত্র ৪১ বলে। তবে সেঞ্চুরির আগে খেলেন সতর্ক হয়ে। ৯৯ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। তার ১১৭ রানের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও দুটি ছক্কা।

সৌম্য-ইমরুল দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ২২০ রানের জুটি। যে কোনো উইকেটে এটি বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর ৫ রান যোগ করতে পারলেই ভেঙে যেত সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের গড়া ২২৪ রানের রেকর্ড। গত বছর কার্ডিফে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেট জুটিতে করেন ২২৪ রান। সেটিই এখন পর্যন্ত সেরা।

তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডে ঠিকই নাম লিখিয়েছেন সৌম্য-ইমরুল। আগে যেটি দখলে ছিল সাকিব ও তামিম ইকবালের। চলতি বছরের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ২০৭ রানের জুটি গড়েন তারা।

তিন ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি এখন ইমরুল কায়েসের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে এ বাঁহাতি ছাড়িয়ে গেছেন ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম ইকবালের করা ৩১২ রানের রেকর্ড।

তিন ম্যাচে ইমরুল করেছেন ৩৪৯ রান। সুযোগ ছিল বাবর আজমের ৩৬০ রানের বিশ্বরেকর্ড ভেঙে ফেলার।

ইনজুরির কারণে তামিম ছিটকে যান জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে। তার বিকল্প হিসেবে ওপেনিংয়ে ফিরে ইমরুল রাখলেন ধারাবাহিকতার অনন্য নজির। মিরপুরে প্রথম ম্যাচেই খেলেন ১৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। চট্টগ্রামে এসে সিরিজ নিশ্চিত করার ম্যাচে করেন ৯০ রান। আর তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে করেন ১১৫।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান করে জিম্বাবুয়ে। শুরুতে হোঁচট খেলেও শেন উইলিয়ামসের অপরাজিত ১২৯ ও ব্রেন্ডন টেলরের ৭৫ রানের ইনিংসে তারা পায় লড়াকু পুঁজি। তবে ইমরুল-সৌম্যর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কাছে তা অল্পই মনে হয়েছে।

শুরুতে দুই উইকেট তুলে নিয়ে জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানদের কোণঠাসা করে রেখেছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার রনি। ৬ রানেই তারা ফিরিয়ে দেন দুই ওপেনারকে। দুই পেসার টানা ২২টি ডট বল করেন দুইপ্রান্ত থেকে। পরে অবশ্য সেটি পুষিয়ে নেন উইলিয়ামস ও টেলর।

তৃতীয় উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ১৩২ রান। তাতেই সফরকারীরা পেয়ে যায় লড়াকু সংগ্রহের ভিত। ৭২ বলে ৭৫ রান করা টেলর বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল অপুর বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে জুটি।

পরের জুটিতে সিকান্দার রাজাকে নিয়ে উইলিয়ামস আরও ৮৪ রান যোগ করলে জিম্বাবুয়ে পেয়ে যায় বড় সংগ্রহের পথ। ৪০ রান করা রাজা অপুর দ্বিতীয় শিকার হন সৌম্যর হাতে ক্যাচ দিয়ে।

শেষদিকে পিটার মুর ২১ বলে ২৮ রান করলে তিনশর কাছাকাছি সংগ্রহ গড়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। উইলিয়ামসের ১৪৩ বলে ১২৯ রানের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও একটি ছয়ের মার। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে শতক পূর্ণ করেন ১২৪ বলে।