মহাসাগর পাড়ি দেয়ার সময় অনেকেই পানিতে নানা বর্জ্য ফেলে। এসব বর্জ্যের মধ্যে প্লাস্টিক অন্যতম। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের একটি দ্বীপে (হেন্ডারসান) পৃথিবীর সব থেকে বেশি পুরু প্লাস্টিক বর্জ্যের অস্তিত্ব পেয়েছেন গবেষকরা।
যুক্তরাজ্যের মালিকানাধীন পিটকেইরন দ্বীপপুঞ্জের একটি হেন্ডারসান দ্বীপ, যা প্রশান্ত মহাসাগরের প্রায় মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। এই দ্বীপে কোন মানুষের বসবাস নেই। আর এই নির্জন দ্বীপে প্রায় ৩৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন টুকরো প্লাস্টিক বর্জ্যের টুকরো জমা হয়েছে।
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ আমেরিকা গামী নৌকা, জাহাজ ও জল যান থেকে ফেলা প্লাস্টিক বর্জ্য স্রোতের সাথে এখানে এসে জমা হয়। এই তথ্য জানার পর গবেষকরা আশা করছেন মানুষ প্লাস্টিকের ব্যবহার সম্পর্কে আরও সচেতন হবে এবং এর ব্যবহার বন্ধ করবে। অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ অংশগ্রহণে পরিচালিত ওই গবেষণায় দেখা গেছে, হেন্ডারসন দ্বীপের প্রতি বর্গমিটারে ৬৭১ টুকরো প্লাস্টিকের বর্জ্য রয়েছে এবং সব মিলিয়ে যার ওজন হবে ১৭ টন।
মাছ ধরার বিভিন্ন জিনিসের পাশাপাশি হেন্ডারসান দ্বীপের প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে টুথ ব্রাশ, সিগারেটের লাইটার এবং রেজারসহ আরও বিভিন্ন নিত্য ব্যবহার্য পণ্য। সাগরের তীরে যেসব কাঁকড়া বাস করে তারা প্লাস্টিকের কৌটা ও বতলগুলোকে বাসা হিসেবে ব্যবহার করছে।
সমুদ্র গবেষকরা বলছেন, আপাত দৃষ্টিতে এটিকে সুন্দর মনে হলেও এটি আসলে খুব ক্ষতিকর। কারণ এই প্লাস্টিকগুলো পুরাতন, তীক্ষ্ণ ও ধারালো। এগুলোও বিষাক্তও বটে।
হেন্ডারসন দ্বীপের বাস্তুসংস্থান এর মৌলিক ১০ প্রজাতির গাছ এবং চার প্রজাতির পাখিসহ অন্যান্য প্রাণিকূলের জন্য বিখ্যাত। এই প্লাস্টিক বর্জ্য বাস্তুসংস্থানে বিরূপ প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দ্বীপেই এই ধরনের ভাসমান বর্জ্য এসে জমছে। এর সাথে কোন নির্দিষ্ট দেশ বা জাতি জড়িত নয়। এই প্লাস্টিক সমুদ্রের জন্য খুবই ধ্বংসাত্মক পরিণতি বয়ে আনবে।