চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

হুলিয়া মাথায় নিয়ে গ্রামছাড়া টাঙ্গাইলের অনেক মানুষ

ছেলের সামনে মাকে ধর্ষণের ঘটনায় এলাকাবাসীর বিক্ষোভে পুলিশের গুলি বর্ষণ এবং তাতে ৪জন নিহত হওয়ার পর টাঙ্গাইলের ঘাটাইল থানার ওসি মোখলেছুর রহমান ও কালিহাতী থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলামকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।

এ নিয়ে ৯ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের খবর নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় সরকার।

তবে বিক্ষোভের ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে দুই থানায় অজ্ঞাত ৭০০ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করায় কালিহাতী ও ঘাটাইলের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া গ্রামগুলো প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে গেছে।

হুলিয়া মাথায় নিয়ে গ্রাম ছেড়েছেন অনেকে।

দিনের বেলায় সতর্কতার সাথে চলাচল করলেও রাতে নিজ বাড়িতে থাকছেন না কেউ। পুলিশের গ্রেপ্তার আতংকে ভুগছে বিক্ষোভে অংশ নেয়া ওই সকল গ্রামের জনসাধারণ।

জনতার বিক্ষোভে পুলিশের গুলি বর্ষণে কতটা যৌক্তিক ছিলো, কেন এই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটলো, কারা এর সাথে জড়িত এসব বিষয়ের কারণ খুঁজতে কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি। পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি আলমগীর আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুলিশের তদন্ত দল কালিহাতী ও ঘাটাইলের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লোকজনের সাথে কথা বলেছে।

এছাড়া টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সরোয়ার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ তারা কাজ শুরু করেছে।

পুলিশের গুলিতে নিহতের পরিবার থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না হলেও সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে শনিবার রাতে ঘাটাইল থানার এসআই মুনসেফ আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৪০০ জনের নামে মামলা করেন। আর কালিহাতী থানার এসআই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন অজ্ঞাত ৩০০ গ্রামবাসীর নামে।

মামলা দায়েরের পর শনিবার রাতেই কালিহাতী থানা প‍ুলিশ ৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

তবে আটকের ঘটনায় তাদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার চারদিনেও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে কালিহাতী ও হামিদপুরে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোড়ে মোড়ে মোতায়েন আছে পুলিশ।

সরেজমিনে গ্রামগুলো ঘুরে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলতে চাইলে তারা পুলিশের মামলা ও নতুন করে ঝামেলা এড়াতে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তাদের অনুরোধ, ঈদের আগেই প্রশাসন যেনো তাদের আতংক দূর করে।