নির্বাচনের আগে হঠাৎ আবিস্কৃত হিলারির ইমেইলে কোনো অপরাধের প্রমাণ খুঁজে পায়নি এফবিআই। এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির বক্তব্য অনুযায়ী বেশিরভাগ ইমেলই পুরনো। এফবিআই’র এজেন্টের একটি বিশেষ দল হিলারির সবগুলো ইমেইল তন্ন তন্ন করে খুঁজেও অপরাধের কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়নি। তাই তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হচ্ছে না। গত জুলাইয়ে কোমি একই রকম ঘোষণা দিয়েছিলেন। কংগ্রেসকে দেয়া এক চিঠিতে একথা জানান এফবিআই প্রধান।
জুলাইতে কোমি বলেছিলেন যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যাবহার করে সংবেদনশীল তথ্যাদি ব্যাবহারের ক্ষেত্রে হিলারি ক্লিনটন অসাবধান ছিলেন কিন্তু অপরাধী নয়।
হিলারি ক্লিনটনের ঘনিষ্ট সহকারি হুমা আবেদিনের সাবেক স্বামী অ্যান্থনি ওয়েনারের একপি ল্যাপটপ হাতাতে গিয়ে এফবিআই এজেন্টরা খুঁজে পায় হিলারির সাড়ে ছয় হাজার ইমেইল। এফবিআই এজেন্টরা অবশ্য অ্যান্থনি ওয়েনারের বিরুদ্ধে ১৫ বছর বয়সী মার্কিন বালিকার কাছে যৌন আকাঙ্খামূলক চিঠি পাঠানোর অভিযোগের তদন্ত করছিলেন।
মার্কিন কংগ্রেসের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও এ্যাটর্নি জেনারেলের আপত্তি সত্বেও ইমেইেলের তদন্তের সিদ্ধান্ত নেন এফবিআই প্রধান জেমস কোমি। আর এই খবর বিদ্যুতের মতো ছড়িয়ে পড়ে সারা যুক্তরাষ্ট্রে। প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি বোমশেল এমনকি এফবিআই’র মধ্যে অভ্যুত্থান বলেও নির্বাচনী প্রচারনায় বক্তব্য রাখেন। এতে নির্বাচনী সকল জনমত জরিপে এগিয়ে থাকা হিলারির জনমতে ব্যপক ধস নামে।
এফবিআই’র প্রধান জেমস কোমি
মাত্র ৯ দিনের মাথায় এবং নির্বাচনের ২ দিন আগে হিলারির অবস্থা যখন টালমাটাল, ডোনাল্ড শিবির তখন দিনের পর দিন এগিয়ে যাচ্ছিল। অনেক অঙ্গরাজ্য হিলারির সমর্থন থেকে ঝুঁকে যখন রিপালিকানদের দিকে যাচ্ছিল তখন আবারো এফবিআই প্রধানের এমন ঘোষণা।
হিলারির ইমেইল ইস্যুতে এফবিআইএর এই সিদ্ধান্তে স্বস্তি প্রকাশ করেছে ডেমোক্র্যাট শিবির। এফবিআই প্রধানের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন হিলারির নির্বাচনী প্রচারণার যোগাযোগ শাখার প্রধান ডেনিফার পালমিয়েরিও।
ডেনিফার পালমিয়েরি বলেছেন, ‘হিলের কাছে পাঠানো ডিরেক্টর কোমির চিঠিটা আমরা দেখেছি। আমরা আনন্দিত যে, গত জুলাইয়ে তিনি যে উপসংহারে পৌঁছেছিলেন সেটিই পাওয়া গেছে। আমরা অবশ্য আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে তিনি এটাই পাবেন। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এই ব্যাপারটার একটা সমাধান হলো’।
এফবিআই’র তদন্তে অপরাধের কোনা কিছুর প্রমাণ না পাওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন হিলারি ক্লিনটন নিজেও। ওহাইও’র কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রচারণায় হিলারি বলেন, তার সহকারি হুমা আবেদিনের ইমেইলেও অপরাধের কোনো প্রমাণ পায়নি এফবিআই।
কংগ্রেসের কাছে লেখা জেমস কোমির চিঠি
তবে এখন শেষ মুহূর্তে দেয়া কোমির এই বক্তব্যকেও রাজনৈতিকভাবে ব্যাখ্যা করেছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিবির। রিপাবলিকান প্রার্থীর উপদেষ্টা নেট গিংগ্রিচ এক টুইটে বলেছেন,‘কোমি নিশ্চয়ই অনেক রাজনৈতিক চাপে ছিলেন।’
আর এ বিষয়ে বিবিসির বিশ্লেষক এন্টনি জুরখার বলেছেন, এই নির্বাচনে যদি ট্রাম্প জেতে তাহলে কোমিকে বহু মানুষই দোষ দেবে। আর যদি ক্লিনটন জিতে তাহলে তিনি নিশ্চয়ই এই বিষয়ে মনের মধ্যে একটা রাগ বা ক্ষোভ পুষে রাখবেন।