লেবাননের শিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন ঘোষণা করেছে আরব লীগ।
শুক্রবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে হিজবু্ল্লাহকে ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন ঘোষণা দেয় উপসারগীয় দেশগুলো সংগঠন জিসিসি (গালফ কো-অপারেশন করপোরেশন)। হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। ইউরোপিয় ইউনিয়নও সংগঠনটিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
সৌদি আরব লেবাননের একটি গ্রুপকে নীরবে চাপ দিচ্ছে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর এমন অভিযোগের একদিন পরই এই সিদ্ধান্ত এলো।
হিজবুল্লাহ শিয়া সম্প্রদায়ের সশস্ত্র শাখার একটি রাজনৈতিক সংগঠন। এরা বর্তমানে প্রতিবেশী সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারকে সমর্থন করে যুদ্ধ করছে। হিজবুল্লাহকে সমর্থন করে সৌদি আরবসহ জিসিসির পাঁচ দেশের আঞ্চলিক বিরোধী ইরান। সিরিয়া ও ইয়েমেনে একে-অপরের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধে সামিল জিসিসি ও ইরান।
আরব লীগের ২২ সদস্য দেশের প্রায় সবাই এ সিদ্ধান্তের পক্ষে রায় দিয়েছে। শুধু লেবানন ও ইরাক রায় দেওয়া থেকে বিরত থাকে।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার বিবৃতি পাঠ করে বাহরাইনের কূটনীতিক ওয়াহিদ মুবারক সায়ার।
বিবৃতিতে বলা হয়, আরব লীগের (পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের) অনুমোদন অনুযায়ী হিজবুল্লাহ একটি ‘সন্ত্রাসী’ সংগঠন।
বৈঠকে লেবাননের নিরপেক্ষ থাকার ব্যাপারে এক টুইট বার্তায় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেবরান বাসিল বলেছেন, ‘আমরা ওই রায়ের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো রায় দেইনি কারণ এটা আরব লীগের সন্ত্রাস বিরোধী চুক্তির সাথে সংগতিপূর্ণ না। তাছাড়া হিজবুল্লাহ লেবাননের বড় একটা অংশের প্রতিনিধিত্ব করে এবং দেশের রাজনৈতিক দল।’
ইরাকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহীম আল-জাফারি হিজবুল্লাহকে ‘সন্ত্রাস’ বলতে অস্বীকার করলে বৈঠকের শুরুতেই বিতর্কে জড়ায় সৌদি আরব।
গত মাসে নিজ দেশের নাগরিকদের লেবানন ত্যাগ করার পরামর্শ দেয় সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও বাহরাইন। এর আগে লেবাননের সামরিক বাহিনীকে দেওয়া সৌদি আরবের ৪ বিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্য বন্ধ করার হয়।
প্রায় একই সময় ইরানের রেভুলেশনারি গার্ডের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ২২ জন শিয়া নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেয় কুয়েত। ১৯৮০ সালে রেভুলেশনারি গার্ডই হিজবুল্লাহ (আল্লাহর দল) গঠন করে। হিজবুল্লাই একমাত্র সংগঠন যারা ১৯৭৫-১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলা লেবাননের গৃহযুদ্ধের পর অস্ত্র ছাড়েনি।