ভারতের মনিপুরের মানবাধিকার কর্মী এবং লৌহমানবী খ্যাত ইরম শর্মিলা ভোটের লড়াই ও রাজনীতি থেকে সড়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।তিনি বলেছেন, আমি চিন্তা করলাম আমি আরেকবার সাধারণ নির্বাচনের জন্য চেষ্টা করবো। কিন্তু পরে আমি অনুধাবন করলাম, আমার দেহ এবং মনের কোন মিল পাচ্ছি না। আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো, আমি আর কোন সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো না।
মনিপুর নির্বাচনে মাত্র ৯০ ভোট পেয়ে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিং এর কাছে বিপুল ভোটে হারের পর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইরম শর্মিলা।
৪৪ বছর বয়সি ইরম শর্মিলা চেনুকে এইচআইভি আক্রান্ত শিশুদের একটি এতিমখানায় শিশুদের সাথে সময় কাটাতে দেখা যায়। রোববার সকালে সাইকেলিং করে ইম্পলের সীমান্তবর্তী সেই সন্ন্যাসী সংঘের দিকে যান। সে সময় তিনি বলেন, আমি কেইসামাথং আমার বড় বোন গোমতি দেবীর সাথে আছি।আমি সকালে কাঙলা দূর্গের কাছে একটি সাইকেল ক্লাবে গিয়েছিলাম। সেখানে ওরা আমাকে একটি সাইকেল দিয়েছিলো যাতে আমি চড়েওছি। আমার পাশের শিশুরা আমাকে প্রশান্তি এনে দিয়েছে। আমি শিশুদের কাছ থেকে খুব নিরবে বিদায় নেবো।’
মনিপুরের ভোট তাকে অনেক সম্মান এনে দিলেও ভোটের ফলাফল তাকে রীতিমত অবাক করেছে। মনিপুরে থাউবাল আসনের ভোটাররা তাকে নিয়ে যেনো নির্দয় উপহাস করলো। তার দল পিআরজেএকে (পিপলস রিসার্জেন্স অ্যান্ড জাস্টিস অ্যালায়েন্স) পেলো মাত্র ৯০টি ভোট, যেখানে ‘না ভোটই’ (নান অব দ্য এ্যাবাভ-এনওটিএ) পড়েছে ১৪৩টি। টানা তিন মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসা কংগ্রেসের ওকরাম ইবোবি সিং আবার ক্ষমতাসীন হচ্ছেন।
তিনি বলেন,‘আমি সকালেই ভোটের ফলাফল জেনেছি এবং এখানে এসেছি স্বস্তির জন্য।কিছুদিনের জন্য আমি মনিপুর ত্যাগ করছি। এসময় আমি কেরালায় এবং আসামে কিছুদিন কাটাবো। যেখানে আমি মেডিটেশন এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানে মনোনিবেশ করতে পারবো।’
ভোটে হারের কথাগুলো বলার সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই মানবাধিকার কর্মী। তিনি বলেন,‘আমি প্রতারিত হয়েছি, এতে জনগণের কোন দোষ নেই, তারা নির্দোষ। আমি জানিনা আমি কান্না করছি কেনো। আমি জানি আমি নৈতিক ভাবে হারিনি।।অনেক ভোটার আমাকে বলেছে, তারা আমাকে ভোট দিতে চায় কিন্তু তাদের ভোট দেওয়ার অধিকার বিক্রি হয়ে গেছে।তাদের মধ্যে অনেকে বলেছে, আমরা আপনাকে ভোট দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমরা আগেই টাকা পেয়ে গেছি। আপনি বেশি দেরী করে ফেলেছেন।
তবে তিনি অন্য প্লাটফোর্ম থেকে এফসিপিএ এর বিরুদ্ধে তার লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে প্রত্যশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোথায় বাস করবো জানিনা কিন্তু যেকোন জায়গা থেকেই জনগণের সেবা করে যাবো ।’